ক্যাটাগরি

‘অতি উৎসাহে’ নতুন শেয়ার না কেনা ভালো: শাকিল রিজভী

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ব্রোকারেজ হাউজ শাকিল রিজভী স্টকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন।

তিনি বলেন, নতুন শেয়ারগুলো বেশি দামে কিনা ঠিক না। বুঝে শুনে নতুন শেয়ার কিনতে হবে। বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠান ও লভ্যাংশ দেওয়ার স্বক্ষমতা দেখে কেনা উচিত। অতি উত্সাহী হয়ে বেশি দামে কিনলে সবার উপর কিন্তু এটার ছাপ পড়ে।

গত বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় টেলিযোগাযোগ খাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানি রবি। কোম্পানিটির ১০ টাকার শেয়ারের দাম বাড়তে বাড়তে এক সময় ৭০ টাকায় উঠে যায়।

এর মধ্যে কোম্পানিটি গত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে আটগুণ মুনাফা দেখানো হলেও বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেওয়া হয়নি। এখন রবির শেয়ার ৭০ টাকা থেকে নেমে লেনদেন হচ্ছে ৪০ টাকার ঘরে। যারা ৭০ টাকায় শেয়ারটি কিনেছেন, তারা লোকসানে আছেন।

নতুন শেয়ারে বিনিয়োগ করে লোকসান কীভাবে এড়ানো যাবে, তার পদ্ধতিও বলে দিয়েছেন তিনি।

শাকিল রিজভী বলেন, সম্ভাব্য মুনাফা বা লভ্যাংশ নিয়ে পুরনো শেয়ারের সঙ্গে নতুন তালিকাভুক্ত শেয়ারের তুলনামূলক পর্যালোচনা করতে হবে।

“আমি যে নতুন শেয়ার অনেক দাম দিয়ে কিনলাম সেটা ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে কিনা সেটা জানি না। অথচ পুরাতন কোম্পানি ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিচ্ছে, সেই শেয়ারটা কিনছি না- তুলনামূলক চিন্তা করতে হবে।”

পাশাপাশি এফডিআর এবং সঞ্চয়পত্রের মুনাফার সঙ্গেও তুলনা করার পরামর্শ দেন তিনি।

শাকিল রিজভী বলেন, ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে পুঁজিবাজারে মন্দাভাব চলছিল। তারপর মহামারীর কারণে আতঙ্ক ছড়ালে পুঁজিবাজার বন্ধ করা হয়। তারপরও এই অবস্থা থেকে পুঁজিবাজারের উত্তরণ ঘটেছে।

এর পেছনে সরকারের প্রণোদনা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নতুন নেতৃত্বের ‘কিছু ভালো সিদ্ধান্ত, ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমে যাওয়া এবং পুঁজিবাজারে ‘কালো টাকা’ বিনিয়োগের সুযোগ প্রভাব ফেলেছে বলে তিনি মনে করেন।

শাকিল রিজভী বলেন, এসবের ফলে পুঁজিবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের যে ভয় ছিল, সেটা কেটে যেতে থাকে; মানুষ পুঁজিবাজারমুখী হয়।

“লেনদেন অনেক বেড়ে যায়; অনেক শেয়ারের দাম ডাবল হয়ে যায়। তবে কিছু কিছু শেয়ার এখনো ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে। তার মানে, আমরা যেটা এখন দেখছি, পুঁজিবাজারে এখন অনেক ভাল খবর আছে।”

সম্প্রতি পুঁজিবাজারে লেনদেন কমে যাওয়ার পেছনে ‘নীতিগত’ কোনো সমস্যা নেই বলে মনে করেন ডিএসইর এই পরিচালক।

তিনি বলেন, এর একটি কারণ হতে পারে যে সূচক ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার ৭০০ পয়েন্টে উঠেছে, কিছু বিনিয়োগকারীর তো ভালো লাভ হয়েছে; তারা কিন্তু মুনাফা তুলে নিয়েছে। কিছু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীও কম দামে শেয়ার কিনে ভালো লাভ করেছে। প্রাইমারি মার্কেটের শেয়ার ব্যবসায়ীরা একটা বড় পুরস্কার পেয়েছেন।

“আমার হিসাবে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে বেরিয়ে গেছে। টাকা বের হয়ে যাওয়ায় ‘সেকেন্ডারি মার্কেট ড্রাই’ হয়ে গেছে। বর্তমানে সেই সময়টাই যাচ্ছে।”