সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের
নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, রোববার রাতে গার্ডার বসানোর সময় হাইড্রোলিক
জ্যাক বিকল হয়ে কোন্দানালা খালের ওপর নির্মানাধীন সেতুর গার্ডার ভেঙে খালে পড়ে যায়।
এ রকম গার্ডার ভেঙে পড়া ‘স্বাভাবিক দুর্ঘটনা’।
“বিকল্প সড়ক থাকায় গার্ডার
ভেঙে পড়লেও যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।”
তবে স্থানীয়রা বলছেন, সেতুটির
নির্মাণ শুরুর পর থেকেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিম্নমানে রড ও সিমেন্ট ব্যবহারসহ
নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে
জানা যায়, গত অর্থ বছরে সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর সড়কে ৪৮ মিটার দীর্ঘ কোন্দানালা খালে
সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতুটি নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছিল ১৩ কোটি টাকা। কাজ পায় ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান ‘এমএন বিল্ডার্স’।
মহামারীর কারণে সেতুটির কাজ
দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সেতুটির গার্ডারের কাজ আবার শুরু হয়।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দা
মুজাহিদ মিয়া বলেন, “গতকাল বিকেলে (রোববার) দেখলাম ব্রিজ আছে, আজকে দেখি ভাঙি গেছে।”
আরেক বাসিন্দা আব্দুর রহমান
বলেন, নিম্নমানের সিমেন্ট ব্যবহারের কারণে ব্রিজের গার্ডারের ঢালাইয়ের সিমেন্ট উঠে
যাচ্ছে। চিকন চিকন রড ব্যবহার করা হয়েছে।
“দুই নম্বরির কাজের ফলেই
আজকে ব্রিজটি কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে গেছে।”
গাড়ি চালক আনফর মিয়া বলেন,
“রোডসের মানুষ (সড়ক ও জনপথ বিভাগের মানুষ) কিতা করে, ইলা দুই নাম্বারি কাম অইলো তাঁরা
কইতো পারে নানি? অনেক দিন দেখলাম তারা আইয়া
ব্রিজ পরিদর্শন করের, অনিয়ম তারা চোখও লাগলো নানি।”
এ সেতুর কাজ করা সাবেক শ্রমিক
সফিক নূর বলেন, ব্রিজের যখন কাজ শুরু হয়, তখন শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। প্রথম থেকেই এখানে নিম্নমানের রড, সিমেন্ট ব্যবহার
করেছে। আমি স্থানীয় হিসেবে এর প্রতিবাদ করায় আমাকে তাঁরা বের করে দেয়।
তবে এসব অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার
করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএন
বিল্ডার্সের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, গার্ডার বসানোর
সময় হাইড্রোলিক জ্যাক বিকল হয়ে যাওয়া এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। খুব দ্রুত সেতুটি আবারও নির্মাণ
করা হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী
প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এখনও বিল দিইনি। তারা পুরো
ব্রিজ নতুন করে কাজ করে দিলে পরে বিল দেব।
সেতু বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।