ক্যাটাগরি

সঙ্কটাপন্ন কুলু বানর

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের রঘুনন্দন পাহাড়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান নানা জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ। এ উদ্যানের বাসিন্দা ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তুর মধ্যে একটি হল কুলু বানর। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ বা আইইউসিএনের লাল তালিকায় এ প্রজাতিকে ‘সঙ্কটাপন্ন’ বিবেচনা করা হচ্ছে। সোমবার সাতছড়ি উদ্যানে দেখা মিলল কুলু বানরের একটি দলের।

  • কুলু বানরের ইংরেজি নাম ‘নর্দার্ন পিগ টেইলড ম্যাকাক’ (Northern Pig-tailed Macaque). বাংলায় এদের আরও কয়েকটি নাম রয়েছে, যেমন কুলু বান্দর, শুকরলেজি বানর, ছোটলেজি বানর, উল্টোলেজি বানর, উলু বান্দর, সিংহ বানর ইত্যাদি।

  • সাতছড়ি ছাড়া বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য মিশ্র চিরসবুজ বনাঞ্চল যেমন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং ফাঁসিয়াখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যেও এদের দেখা মেলে।

  • কুলু বানর দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। পুরুষ, স্ত্রী ও বাচ্চা মিলে ৫ থেকে ২৫টি বানর দেখা যায় এক একটি দলে।

  • কুলু বানরের পুরুষ সদস্য দলের নেতৃত্ব দেয়। পুরুষ বানর স্বভাবে বেশ রাগী। কাউকে ভয় দেখানোর জন্য দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে এরা ভেংচি কাটে।

  • কুলু বানর দৈর্ঘ্যে ৪০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এদের লেজের রং সোনালি এবং ১৮ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার দীর্ঘ। দেহ হালকা বাদামি রঙের। পিঠের রঙ হালকা সোনালী থেকে বাদামি। মাথার মাঝখানে চ্যাপ্টা ও কালচে। দেহের উপরের অংশ জলপাই ধূসর, নিচের অংশ ধূসর সাদা। এ দলের প্রধান পুরুষ বানরের রয়েছে সিংহের মতো কেশর।

  • নানারকম বুনো ফল, শস্য, গাছের কচিপাতা, পাখির ডিম, কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি কুলু বানরের প্রধান খাদ্য।

  • ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) তাদের লাল তালিকায় কুলু বানরকে ‘সঙ্কটাপন্ন’ প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।