তাদের এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে চীনা ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটি মিয়ানমারে সহিংসতা উসকে দিতে পারে এমন সব কনটেন্ট সরিয়ে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ।
গত মাসের অভ্যুত্থানের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুক তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও এর সংশ্লিষ্ট সকল কিছুকে নিষিদ্ধ করার পর দেশটির সামরিক জান্তা অন্যান্য জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোর দিকে ঝুঁকতে শুরু করে।
এমআইডিও জানিয়েছে, তারা ৮০০র বেশি সামরিক জান্তাপন্থি ভিডিও পেয়েছে যেগুলোতে মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে কিছু কিছু ভিডিও কয়েক লাখবারও দেখা হয়েছে।
“এটি খুবই ক্ষুদ্র অংশ,” যে ভিডিওগুলো তারা পেয়েছেন সেগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন এমআইডিও’র নির্বাহী পরিচালক হতাইকে হতাইকে অং। তিনি জানিয়েছেন, চীনা ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটিতে ইউনিফর্ম পরিহিত সৈন্য ও পুলিশের এ ধরনের শত শত ভিডিও আছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তারা এ ধরনের এক ডজনেরও বেশি ভিডিও দেখেছে, যেগুলোতে বিভিন্ন বাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিতরা অভ্যুত্থানের বিরোধিতা ও অং সান সুচিসহ বন্দিদের মুক্তির দাবি জানানো বিক্ষোভকারীদের হুমকি দিয়েছেন। ভিডিওগুলোর কোনো কোনোটিতে হুমকিদাতাকে বন্দুক উচিয়ে শাসাতেও দেখা গেছে।
ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে টিকটকে আসা এমন এক ভিডিওতে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা এক ব্যক্তিকে তার অ্যাসল্ট রাইফেল ক্যামেরার দিকে তাক করে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে ‘আমি তোমাদের মুখে গুলি করবো, আমি সত্যিকারের বুলেট ব্যবহার করবো’ বলতে শোনা যায়।
“আজ রাতে আমি সারা শহর টহল দেবো। যাকেই দেখবো, গুলি করবো। যদি তুমি শহীদ হতে চাও, তাহলে আমি তোমার ইচ্ছা পূরণ করবো.” বলেন বন্দুকধারী ওই ব্যক্তি।
রয়টার্স ওই ব্যক্তি এবং অন্যান্য ভিডিওতে থাকা ইউনিফর্ম পরিহিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। এদের সবাই বা কেউ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য কিনা, তাও নিশ্চিত হতে পারেনি তারা।
এ প্রসঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সামরিক জান্তার এক মুখপাত্রের মন্তব্য চাইলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।
রয়ূটার্স টিকটকের যেসব ভিডিও পর্যালোচনা করেছে সেগুলো চলতি সপ্তাহেই প্ল্যাটফর্মটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
“আমাদের সুস্পষ্ট কমিউনিটি গাইডলাইন আছে, যাতে বলা হয়েছে সহিংসতায় উসকানি বা মিথ্য তথ্য যা ক্ষতিকর হতে পারে এমন কনটেন্ট আমরা অনুমোদন করতে পারি না। মিয়ানমারের ক্ষেত্রেও যেসব কনটেন্ট সহিংসতায় উসকানি দেবে কিংবা মিথ্যা তথ্য ছড়াবে সেগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে দেওয়া অব্যাহত থাকবে। আমাদের নির্দেশনা লংঘন করতে পারে এমন কনটেন্ট সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আগ্রাসী নজরদারি থাকবে,” বলা হয়েছে টিকটকের বিবৃতিতে।