ক্যাটাগরি

৬ ওয়ানডে খেলেই অধিনায়ক বাভুমা, টেস্টের নেতৃত্বে এলগার

বোর্ডের ওয়েবসাইটে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে কুইন্টন ডি ককের কাঁধ থেকে নেতৃত্বভার সরিয়ে তিন সংস্করণেই নতুন অধিনায়ক বেছে নেওয়ার ঘোষণা দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

দুজনকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দীর্ঘ মেয়াদের পরিকল্পনায়। আগামী দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ সামনে রেখে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে বাভুমাকে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরবর্তী চক্রে এই সংস্করণে নেতৃত্বে থাকবেন এলগার।

স্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়া প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান অধিনায়ক বাভুমা। টেস্টের সহ-অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করবেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফাফ দু প্লেসি টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর যোগ্য কাউকে খুঁজে পাচ্ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই গত ডিসেম্বরে অস্থায়ীভাবে ডি কককে দেওয়া হয় টেস্টের দায়িত্ব। অন্য দুই সংস্করণে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তিনি আগে থেকে।

ডি ককের নেতৃত্বে গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-০ তে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর পাকিস্তান সফরে এসে টেস্ট সিরিজে একই ব্যবধানে হার সঙ্গী হয় তাদের। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশডও হয় তারা ডি-ককের অধিনায়কত্বে।

চাপ কমাতে তাকে টেস্টের নেতৃত্ব থেকে ‘মুক্তি’ দেওয়া হবে বলে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের আগে জানিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচ মার্ক বাউচার। অনেকটা আচমকাই একই সঙ্গে অন্য দুই সংস্করণের নেতৃত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হলো এই কিপার-ব্যাটসম্যানকে।

এতদিন দলকে নেতৃত্ব দেওয়ায় ডি কককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট পরিচালক গ্রায়েম স্মিথ।

“সীমিত ওভারের সংস্করণের অধিনায়ক হিসেবে এতদিন দায়িত্ব পালনের জন্য তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। একই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচক প্যানেল টেস্ট অধিনায়ক খোঁজার সময়ে সে এগিয়ে আসায় তার কাছে আমরা ঋণী। আশা করি, এখনও দলের কোনো সিদ্ধান্তে প্রয়োজনে ভূমিকা পালন করবে সে।”

“টেম্বা ও ডিনকে দায়িত্ব দিয়ে আমরা খুশি। আমার বিশ্বাস, তারা প্রোটিয়াদের জয়ের পথে ফিরিয়ে আনবে।”

টেস্টের নেতৃত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে এলগারের অভিজ্ঞতা বড় ভূমিকা রেখেছে। এখন পর্যন্ত ৬৭ টেস্টে ৩৯.৮১ গড়ে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান করেছেন চার হাজার ২৬০ রান। সেঞ্চুরি আছে ১৩টি। এর আগে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দুটি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।

৪৪ টেস্ট খেলা বাভুমার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অধিনায়কত্বের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটে লায়ন্স ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েছেন দুটি করে প্রথম শ্রেণির ও টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের শিরোপা। এর মধ্যে কিছুদিন আগে শেষ হওয়া সিএসএ টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

তিনটি বিশ্বকাপে দেশকে নেতৃত্ব দিতে মুখিয়ে আছেন ৩০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।

“প্রোটিয়াদের অধিনায়কত্ব করা আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল। আমার কাছের লোকজন বিষয়টা জানে। এটা আমার জীবনের অনেক বড় সম্মান। কুইনি (ডি কক) যেখানে দায়িত্ব ছেড়েছে সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নিতে চাই আমি।”

“দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্বটাকে আমি হালকাভাবে নিই না। নতুন এই চ্যালেঞ্জ, টেস্ট ক্রিকেটে ডিনের সঙ্গে যাত্রা, একই সঙ্গে নিকট ভবিষ্যতে দলকে তিনটি বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিতে মুখিয়ে আছি আমি।”

টেস্টের নেতৃত্ব হয়তো প্রভাব ফেলেছিল ডি ককের পারফরম্যান্সে। ছয় ইনিংসে তিনি করতে পারেন কেবল ৭৪ রান। সর্বোচ্চ ২৯। পাকিস্তানের বিপক্ষে তার বোলিং ও ফিল্ডিং সাজানোও হয় প্রশ্নবিদ্ধ।

দক্ষিণ আফ্রিকার পরের সিরিজ আগামী মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে, যেখানে তারা খেলবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। অস্ট্রেলিয়া মার্চের টেস্ট সফর স্থগিত করায় নিকট ভবিষ্যতে তাদের কোনো টেস্ট খেলা নেই।