এ নিয়ে টানা তিন দিন দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬০০ জনের উপরে থাকল। তার আগে গত ২৫ জানুয়ারি থেকে পাঁচ সপ্তাহ এই সংখ্যা ছয়শর নিচেই ছিল। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে তা তিনশর নিচেও নেমেছিল।
শুক্রবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে মারা যাওয়া ৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৮ হাজার ৪৪১ জনের মৃত্যু হল।
আর গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৩৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৪ জন হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৬৭৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ১ হাজার ১৪৪ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সোয়া ৫ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১৪ জানুয়ারি। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ২৩ জানুয়ারি তা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১১ কোটি ৫৬ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৫ লাখ ৬৯ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৯তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৮টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৯টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৭২টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ২১৯টি ল্যাবে ১৩ হাজার ৭১০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪১ লাখ ১৯ হাজার ৩১টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩১ লাখ ৬৭ হাজার ৬১৯টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৯ লাখ ৫১ হাজার ৪১২টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ এবং ২ জন নারী। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।
তাদের ৪ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং ১ জন করে মোট ২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৩ জন ঢাকা বিভাগের, ২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৪৪১ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৩৮১ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ৬০ জন নারী।
তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৭০১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ৮৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৫৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪২২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৪ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে ৪ হাজার ৭২৫ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৫৫৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৭৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৬১ জন খুলনা বিভাগের, ২৫৩ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১১ জন সিলেট বিভাগের, ৩৬৩ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৯৬ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।