শুক্রবার বিকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে ‘রাষ্ট্রীয় হেফাজতে মুশতাক হত্যার বিচার, ছাত্র-শ্রমিকসহ রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের’ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সামাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মাক্সবাদী) সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, “রোববারের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত না জানালে প্রেস কনফারেন্স করে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেব আমরা।”
‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনসমূহে’র ব্যানারে আয়োজিত এই সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তাজাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “এ আইন সবার মুখে ভাষা কেড়ে নিতে নয়, কেবল যাদের মুখের ভাষা তীর্যক, যারা এ রাষ্ট্রকে পথ দেখাতে চায়, যারা সৃষ্টিশীল মানুষ, তাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে এ আইন তৈরি করা হয়েছে। এ আইনের প্রথম শহীদ হল সৃষ্টিশীল লেখক মুশতাক। এই আইন বাতিল না হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে।”
সমাবেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের যুক্তি তুলে ধরে লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা বলেন, “অনেকে এ আইন সংস্কারের কথা বলছেন। কিন্তু আমরা এই কালো আইন বাতিল চাই। কারণ এই আইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় এমন কিছু ধারা এবং উপ-ধারা আছে। এটিকে সংস্কার করেও কোনোভাবে রাখা সম্ভব না। কারণ এ আইনের আদ্যপান্ত একটি নিপীড়নমূলক এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী আইন।”
সমাবেশ থেকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে এক মশাল মিছিল থেকে গ্রেফতারকৃত প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের সাত নেতা-কর্মীসহ খুলনার শ্রমিক নেতা রুহুল আমিনের মুক্তির দাবি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানানো হয়।
ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজনের সঞ্চালনায় সমাবেশে হেলথের সংগঠক ডা. হারুন অর রশীদ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অভিনু কিবরিয়া ইসলাম, ঊদীচীর শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার, বাসদের সদস্য মানস নন্দী, নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বক্তব্য দেন। এছাড়া ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্সসহ বাম-ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।