চীন সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ই রোববার বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
চীনের পার্লামেন্টের বার্ষিক সমাবেশ অনুষ্ঠানের ফাঁকে ওই সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং আরো বলেন, ‘‘মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছায় এবং দেশটির সার্বভৌমত্বের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখে চীন সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী…
‘‘দেশটিতে চলমান উত্তেজনা নিরসনে চীন গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে চায়।”
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতার দখল নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। পশ্চিমা দেশগুলো সেনাঅভ্যুত্থানের কঠোর নিন্দা জানিয়ে দ্রুত অং সান সু চিসহ তার দলের আটক নেতাদের মুক্তি এবং বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বলেছে। নতুবা মিয়ানমারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু চীন অভ্যুত্থানের বিষয়ে কিছু বলছে না। বরং তারা প্রতিবেশী দেশের স্থিতিশীলতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে সেটা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার উপর জোর দিচ্ছে।
সেনাঅভ্যুত্থানের পরপরই এর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ গণবিক্ষোভে শুরু করেছে। টানা ওই গণবিক্ষোভে এরইমধ্যে প্রায় অর্ধশত সাধারণ মানুষের প্রাণ গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুঞ্জন রয়েছে, মিয়ানমারে সেনাঅভ্যুত্থানের পেছনে চীনের হাত রয়েছে। এ গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, সেনাভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ‘চীন নিশ্চিতভাবেই এমনটা দেখতে চায়নি’।
অভ্যুত্থানের পর মিয়ামনার সেনাবাহিনী ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় যাওয়া সু চি এবং তাদের দলের নেতাদের আটক করে এবং দেশজুড়ে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে এক বিবৃতিতে সু চি এবং বাকি নেতাদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং জরুরি অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। যার সঙ্গে চীনও একমত পোষণ করেছে।
ওয়াং বলেন, ‘‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সহ মিয়ানমারের সব দল এবং জোটের সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং সবসময় মিয়ানমারের সব দলের সর্বসম্মতিক্রমেই চীনের সঙ্গে এ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে।
‘‘কিভাবে মিয়ানমারের পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় সেটা চীনের কাছে কোনো বিষয় নয়। বরং চীন সব সময় দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর এবং চীনের এ অবস্থানের পরিবর্তন কখনোই হবে না।”
চীনের হাতে আগে থেকে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের খবর ছিল না বলেও দাবি করেছে বেইজিং।