ক্যাটাগরি

এক পোয়া মাছ পৌনে তিন লাখ টাকায় বিক্রি

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফ উপকূলে বঙ্গোপসাগরের ১৭ বাইন এলাকায় মাছটি জালে ধরা পড়ে বলে জানিয়েছেন জেলেদের সেই ট্রলারের মালিক মোহাম্মদ শাহ আলম।

রূপালি পোয়া মাছটির ওজন ৩৬ কেজি ৭০০ গ্ৰাম। মাছটি লম্বা প্রায় সাড়ে তিন ফুট। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এটি ‘কালা পোপা’ নামেও পরিচিত বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

ওই ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ শফিক বলেন, “মাছটি দুই লাখ ৮০ হাজার টাকায় সাবরাং ইউনিয়নের রুহুল্লার ডেবা এলাকার আজিজ উল্লাহর ছেলে মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম কিনেছেন। বর্তমানের মাছটি তার ফিশারিজে রয়েছে‌।”

মাছটির ক্রেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “আমি ঝুঁকি নিয়ে মাছটি কিনেছি। মাছটি এখন পর্যন্ত বেচা-কেনা হয়নি।

“মাছটি কেটে বিক্রি করলে প্রতি কেজির দাম ৭০০ টাকার বেশি পাওয়া যাবে না। সেই হিসেবে ২৫ হাজার ৫০০ টাকা পাওয়া যাবে। তবে এর বায়ুথলির দাম অনেক চড়া।”

এ মাছের বায়ুথলির দাম অনেক বেশি হওয়ায় চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির জন্য যোগাযোগ করছেন বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী পিকে দাশের কাছে মাছটি বিক্রি করতে পারেন জানিয়ে তিনি বলেন, পিকে দাশ বিদেশে মাছ ও মাছের বায়ুথলি রপ্তানি করে থাকেন।

পোয় মাছটির বায়ুথলির ওজন ৯০০ গ্রামের বেশি হলে ভালো লাভ হবে আর কম হলে লোকসান হবে বলেন তিনি।

বঙ্গোপসাগরে ৩৭ কেজি ওজনের পোয়া মাছটি ধরা পড়ার খবর শোনার কথা উল্লেখ করে টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সাধারণত এত বড় পোয়া মাছ সহজে ধরা পড়ে না।

“পোয়া মাছের বায়ুথলি বা এয়ার ব্লাডারের কারণে মাছটির অত্যধিক মূল্য।”

এয়ার ব্লাডার দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিকাল সুতা তৈরি হওয়ায় মাছটির এত দাম বলেন এ মৎস্য কর্মকর্তা।

যেভাবে ধরা পড়ল মাছটি

টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রীপাড়ার কাদির হোসেনের ছেলে শাহ আলমের ট্রলারের জেলেরাই পোয়া মাছটি ধরেছেন।

শাহ আলম বলেন, গত শনিবার সকালে তার মালিকানাধীন ট্রলারটি নিয়ে ১০ জন মাঝি-মাল্লা বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যান। এ সময় মাছ ধরার জন্য লাক্ষা জাল সাগরের ফেলা হয়।

“প্রথম দফায় ইলিশ, রূপচান্দা এবং লাল কোরালসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেড় লক্ষাধিক টাকার মাছ ওঠে। 

“দ্বিতীয় দফায় আবারও জাল ফেলা হলে কয়েকটি ইলিশ এবং রূপচাঁদার সঙ্গে কালা পোপা (পোয়া) মাছটি জালে আটকা পড়ে।”

মাছটি ধরা পড়ার পরপর জেলেরা খবরটা জানালে তাদের টেকনাফে ফিরে আসার নির্দেশ দেন বলে জানান এই ট্রলার মালিক।

ওই ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ শফিক জানান, সাগরের ফেলা জালটি বারবার টান দিচ্ছিলেন। তাদের মনে হয় বড় কিছু জালে আটকেছে। জাল টেনে কাছে আনতেই বড় মাছ দেখে জেলেরা আনন্দে দিশেহারা হয়ে পড়েন।

“ওই মুহূর্তে কী করব কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না। পরে নৌকা নিয়ে তীরে ফেরত আসি।

“আসার সঙ্গে সঙ্গে জালে বড় মাছ ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। টেকনাফে কায়ুকখালীয়া মৎস্য ঘাটে এসে পৌঁছালে উৎসুক জনতা মাছটি দেখতে ভিড় জমায়।”