ক্যাটাগরি

নারী, স্বপ্নই তোমায় পথ দেখাবে

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রয়াত বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালামের এই উক্তি যেন বদলে দেয় অনেক মানুষের চিন্তা ও কাজের ধরন।

তীব্র ইচ্ছা শক্তি থাকলে মানুষ যে কোনো অবস্থান থেকেও লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করে এবং সফলও হতে পারে। সফলতার কোনো নির্দিষ্ট মাপ কাঠি নেই। নিজের অবস্থান থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়াই হল সফলতার দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া

চারপাশে অনেক সফল নারীকেই দেখি যাদের সফলতা আমাদের কাছে বেশ স্বাভাবিক মনে হতে পারে। আবার এদেরকে দেখে আমরা উৎসাহিত হই। তবে অধিকাংশ নারীর এগিয়ে যাওয়ার পেছনের গল্পটা সহজ নয়।

যারা বুকে স্বপ্নকে লালন করেছেন ও প্রতিকূল অবস্থাকে মোকাবেলা করেছেন তারাই ধীরে ধীরে এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে।

এমন তিন নারী তাদের কথা বলেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে, জানিয়েছেন তাদের চড়াই উৎড়াইয়ের পেছনের গল্প।

বিয়ে করে ‘সেটেল্ড’ হওয়াই একমাত্র কাজ নয়

রাহাতারা ফেরদৌসি বর্তমানে কানাডার অটোয়া ইউনিভার্সিটিতে সহকারী গবেষক হিসেবে কাজ করছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানিয়েছেন নানা প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা।

তিনি বলেন, “আজ আমি কোথায় আছি, কী কাজ করছি, কী অর্জন করছি তা সবাই জানে। তবে এতোটুকু পথ পাড়ি দিতে আমাকে ছোট থেকেই পার করতে হয়েছে অনেক বন্ধুর পথ। আর আমার মনে হয় প্রতিটা মানুষকেই নানা রকম পারিবারিক বা সামাজিক কোনো না কোনো প্রতিবন্ধকতা পেরিয়েই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয় আর নারীদের ক্ষেত্রে এর মাত্রাটা অনেক বেশি থাকে।”

রাহাতারা জানান খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তার। যেখানে মোটামুটি পড়াশুনা করিয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বিয়ে দিয়ে ‘সেটেল’ হওয়ার বিষয়টাকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করা হয়। তার ক্ষেত্রেও বিষয়টা তেমনই ছিল। পরিবারের মতে কোনো রকম পড়াশুনা করলেই হল। কারণ উপযুক্ত বয়স হলে তাকে বিয়ে দেওয়া হবে। তবে তিনি তা মানতে চাননি। কোনো প্রতিবন্ধকতাই তার পড়াশুনা থামাতে পারেনি।

তিনি বলেন, “নবম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় খুব জোর জবরদস্তি করেই আমি বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হই। এসএসসি’তে ভালো ফলাফল করার পরেও ইন্টারে উঠে আমাকে আবার বিষয় পরিবর্তনের জন্য বলা হয়। কিন্তু, আমি তখনও তা মেনে নেই-নি। জোর করেই বিজ্ঞানে পড়াশুনা করি এবং রেজাল্টও ভালো করি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ছয়টা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেই এবং ‘প্লেস’ করি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আইটি’তে পড়ার ইচ্ছা ছিল খুব। ভর্তি পরীক্ষায় ‘আইটিতে’ প্রথম বিশ জনের মধ্যে আমার নাম থাকার পরেও সেখানে ভর্তি হওয়া হয়নি। কারণ আমার বাবার ইচ্ছা ছিল আমি বাসার কাছেই কোথাও ভর্তি হব। বাড়ির বাইরে থেকে পড়াশুনা করাটা তিনি মানতে চাননি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাক্রমে প্রথম স্থান অধিকার করি। বাড়ির কাছে হওয়ায় সেখানেই ভর্তি হই কম্পিউটার সায়েন্সে।”

তিনি আরও বলেন, “দ্বিতীয় বর্ষে পড়া অবস্থায় আমি পরিবারের পছন্দে বিয়ে করতে হয়। কারণ ওই যে পরিবারের মতে আমাকে ‘সেটেল’ হতে হবে। বিয়ের পরে ভার্সিটির বন্ধুবান্ধব অনেকেই একটু ভিন্ন চোখে দেখতো। এমন একটা তাচ্ছিল্য ভাব দেখাতো সবাই যে বিয়ে হয়ে গেছে মানে আমার পড়াশুনা ‘ক্যারিয়ার’ সবই শেষ হয়ে গেছে।

“কম্পিউটার সায়েন্সের মতো একটা সাবজেক্টে পড়া বেশ পরিশ্রমের আর একজন অবিবাহিত ছাত্রীর তুলনায় বিবাহিত ছাত্রীর জন্য আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। আবার বড়রা বলতো এতো পড়াশুনা করে আর কি হবে এখন সংসার আছে সেদিকেও ঠিক মতো মন দাও। এসকল ব্যাপারে খুব হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি আর রেজাল্ট খারাপ হতে শুরু করে।”

এসব প্রতিকূল পরিবেশ ধীরে ধীরে মোকাবিলা ও নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে আবার পড়ায় মনোযোগ দেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায় ফলাফল ভালো হতে থাকে আর বিভিন্ন প্রজেক্টে ও ক্যাম্পে অংশ গ্রহণ করেন। স্বামীর অনুমতি আর সহায়তা থাকলেও বিরোধিতা করেছিলো তার পরিবার। তবুও স্বামীর সহায়তায় তিনি এসব কার্যক্রম চালিয়ে যান।

“আমি ঢাকায় পলিটেকনিক্যাল কলেজে ‘ইন্সট্রাক্টর’ হিসেবে চাকুরি শুরু করি। পরে স্বামীর পরামর্শে সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি’তে শিক্ষক হিসেবে পরীক্ষা দেই ও নির্বাচিত হই। এক্ষেত্রেও সমাজের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় যে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মাঝখানে কোনো সমস্যা চলছে কিনা, এগুলোও প্রতিনিয়ত মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। স্বামীর সাহায্য করার মনোভাবকে নিরুৎসাহিত করার মতো লোকের অভাব ছিলো না।” বলেন তিনি।

রাহাতারা আরও বলেন, “বিবাহিত হওয়া, চাকুরি করার পরেও যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাকে আমার পরিবার ও সমাজের মানুষের নানা রকম প্রশ্নের কথা ভাবতে হত এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হত, অর্থাৎ এখনও আমি নিজের মতো করে ভাবতে পারি না। তবে এটাও ঠিক সমাজ ও পরিবারের সব বাধা নিষেধ মেনে চললে আমি এখন এই পর্যায়ে থাকতে পারতাম না।”

রাহাতারার মতে, সামনে এগিয়ে যেতে চাইলে প্রতিবন্ধকতাকে এড়িয়ে বরং নিজের আগ্রহ ও যোগ্যতার দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এতে লক্ষ্যে স্থির থাকা যায়, নইলে পিছলে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

এখন নিজেই পার্লারের মালিক

বড় হওয়ার প্রবল ইচ্ছা ও নিজেকে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করার প্রচেষ্টা কথা জানিয়েছেন নেত্রকনার রানীখংয়ের, কুহেলি ক্যাথরিনা আজিম।

জন্মের চার বছর পরেই মাকে হারিয়ে ফেলেন কুহেলি। বাবা ঘর বাঁধেন নতুন করে আর তার জায়গা হয় ‘ফিন্নিস ফ্রি শিশু সদনে’। সেখানে পড়াশুনা, হাতের কাজ ও অন্যান্য কার্যক্রম শিক্ষা গ্রহণ করেন। এসএসসি পাশ করেন। এরপর এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে এইচএসসি পড়া শুরু।

তবে আর্থিক সমস্যার কারণে তার আর পড়াশুনা করা হয়ে ওঠে না। বাধ্য হয়ে বিয়ে করতে হয়। নতুন জীবনে সচ্ছল হতে স্বামীর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন কুহেলী।

তিনি বলেন, “অনাথ-আশ্রমে থেকে যেসব হাতের কাজ শিখেছিলাম তা দিয়ে কাজ শুরু করি। ব্যাগ, চুড়ি, শো-পিস, সেলাইয়ের কাজ ইত্যাদি নানাভাবে উপার্জনের চেষ্টা করি। কিন্তু এতে পরিশ্রম অনেক ও আয় কম, সংসারের কাজ করার পাশাপাশি এক্ষেত্রে অত সময় দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে আয় কম থাকে।”

“এরপর একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করি। পরিশ্রম কমিয়ে আয় বাড়ানোর উপায় খুঁজতে থাকি। পার্লারের জনপ্রিয়তা থাকলেও কেনো জানিনা মানুষ এই পেশাকে খুব খারাপ ভাবে দেখতো, এখন যদিও এতে পরিবর্তন এসেছে।”

“নিজের প্রয়োজনেই আমি পার্লারের কাজ শেখা শুরু করি। নানান জায়গায় ট্রেনিং নেই। ধানমণ্ডি, গুলশান ও ফার্মগেটের বিভিন্ন পার্লারে আমি ছয় মাস, আট মাস ও এক বছর এমন খণ্ড খণ্ড মেয়াদে কাজ করি ও শিখি। এরপর ২০০৫ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ‘পারসোনা’তে একটানা কাজ করি ও অনেকগুলো ট্রেইনিং নেই।”

কাজের চাপ ও আয়ের ভারসাম্যহীনতা থাকায় নিজেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে স্বপ্নপূরণের পথে যাত্রা শুরু হয়।

“২০১১ সাল থেকে ছোট পরিসরে একটা রুম ভাড়া নিয়ে পার্লারের ব্যবস্থা করি। প্রথমে কেবল ভ্রু প্লাক, চুল কাটা এমন ধরনের কাজ করি। মানে পুঁজি ছাড়া ব্যবসা। এরপর ধীরে ধীরে পার্লারের পরিসর বাড়াই। নিজে অন্যান্য সুবিধাবঞ্চিত আগ্রহী মেয়েদের কাজ শেখানো শুরু করি।” বলেন তিনি।

দশ বছর ধরে পরিশ্রম আর নিষ্ঠার সঙ্গে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছেন কুহেলি। কঠিন এই পথ চলায় অনেকেই পাশে ছিল অনেকেই আবার নিরুৎসাহিত করেছেন।

কোভিড-১৯’য়ের জন্য পার্লার ব্যবসা বলা যায় অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানা এক বছর মন্দা চলায় অনেকেই তাকে বলেছেন এই পথ ছেড়ে অন্য কিছু ভাবতে। কিন্তু তিনি নিজে এখনও আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসের জোরেই তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন পার্লারের কাজ।

ভবিষ্যতে গারো সম্প্রদায়ের নারীদের নিয়ে কাজ করার ও সুবিধা বঞ্চিত নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও আছে বলে জানান কুহেলি।

দোকান সামলাচ্ছেন সংসারও করছেন

আরও একজন নারী মমতা গমেজ। যিনি গৃহিনী হিসেবেই কাটিয়েছেন প্রায় দশ বছর।

আট ভাইবোনের সংসার, পারিবারিক কারণেই খুব বেশি পড়াশুনা করা হয়ে ওঠেনি।

প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পরেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। পড়াশুনা না করায় খুব একটা ভালো চাকুরি পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু একদম ঘরে বসেও জীবন কাটিয়ে দিতে চাননি মমতা। বরাবরই নিজে কিছু একটা করা চেষ্টা করে গেছেন।

স্বাবলম্বী হতে প্রথমে তিনি ছোট খাটো ব্যবসার চেষ্টা করেন। স্বামীর সহযোগিতায় স্বল্প পুঁজিতে কাপড়ের ব্যবসা করেন। ব্যবসা ভালো চলার পরেও শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক সমস্যার কারণে তা বন্ধ রাখতে হয়েছিল।

“কাপড়ের ব্যবসার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারিনি। পরে এলাকাতেই একটা মুদি দোকান ভাড়া নেই। তাতে কিছু পুঁজি বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করি। প্রথমে দোকান খুব ভালো না চললেও আমি হাল ছেড়ে দেইনি। ধীরে ধীরে এর বেচাকেনা বাড়ে। একজন লোক রেখে দেই দোকান দেখাশুনার জন্য।”

“এলাকা ও পরিবারের প্রায় সবাই আমার এই উদ্যোগের বিপক্ষে ছিল। পাশে পেয়েছি আমার স্বামী কাছের দুয়েকজন আত্মীয়স্বজনকে। অধিকাংশ মানুষই উৎসাহের বদলে বিদ্রুপই করত। আর একজন নারীর দোকান পরিচালনা নিয়েও ছিল নানা রকমের মতামত।”

“এমন কয়েক বছর চলার পরে দোকানে সীমিত পরিসরে ‘ফাস্ট ফুড’ সার্ভিস শুরু করি। দুই বছর ধরে ঘরে তৈরি পুরি, শিঙাড়া, নিমকি, কেক, চটপটি, কিমা পুরি, মোগলাই, জিলাপি ইত্যাদি খাবার বিক্রি করছি। নিজে হাতে দোকানের সকল খাবার বানাই। সহযোগিতা করার জন্য একজন লোক থাকে। যিনি হাতে হাতে আমার কাজ গুছিয়ে দিতে সাহায্য করে। রান্নার কাজ যেহেতু একা করি তাই প্রতিদিন এত পদ রাখনি না। সারা সপ্তাহে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নানা রকম আইটেম তৈরি করি।”

নিজের আয় দিয়ে খুব ভালো মতো চলছে তার। একমাত্র ছেলের যে কোনো আবদার তিনি পূরণ করতে পারেন। তাছাড়া নিজে আয় করা সঙ্গে সঙ্গে তার মনোবলও বৃদ্ধি পেয়েছে। তার এই পথ চলায় স্বামীর অবদান ও সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন তিনি।

তার মতে, একদম ঘরে বসে থাকার চেয়ে নিজে কিছু করে উপার্জন করার চেষ্টা করা ভালো। এর মাঝে যে শান্তি আছে আর যে মনোবল সৃষ্টি হয় তা পৃথিবীর অন্য কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনা করার মতো নয়।

প্রকৃত অর্থে, আগ্রহ ও নিজের ওপর বিশ্বাস থাকলে মানুষ বাধা বিপত্তি এড়িয়ে যেতে পারে। নারীর উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ, কর্ম ক্ষেত্রে নিজেকে উপস্থাপন করা, ব্যবসায় শুরু ইত্যাদি যে কোনো পদক্ষেপে তাকে এখনও পারিবারিক ও সামাজিক নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এর যাতাকলে কেউ হারিয়ে ফেলেন নিজের স্বপ্নকে; কেউ বা সব বাধা এড়িয়ে এগিয়ে যান।

সরকারিভাবে নানান সুযোগ সুবিধা দেওয়ার পরেও নারীরা সামাজিক নানা কারণে ও অন্যরা কি বলবে বা তার গ্রহণ করা কোনো পদক্ষেপে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই নিজের স্বপ্ন ও ক্যারিয়ার থেকে অনেকটা বিচ্যুত হয়ে যান বলে মনে করেন, রাহাতারা ফেরদৌসি।

মমতা গমেজের মতে, “কারও বড় হওয়ার আগ্রহ থাকলে সে কোনো না কোনোভাবে পথ খুঁজে নেয়, একদম হাত পা গুটিয়ে ঘরে বসে থাকবে না।”

কেবল নিজে এগোলেই হবে না, সুবিধাবঞ্চিত অন্যান্য নারীদেরকেও যদি সহযোগিতা করা যায় তাহলে আমাদের নারী সমাজ আরও অনেক উন্নতি করবে বলে মনে করেন, কুহেলি আজিম।