তার সাজা কেন বাড়ানো হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে সেই রুলে।
দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদকের রিভিশন আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রুল জারি করে।
আদালতে দুদকের আবেদনে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
ডিএজি মানিক পরে সাংবাদিকদের বলেন, “দুদকের আবেদনে জারি করা এ রুল ও এম এ মান্নানের করা আপিল আগামী ১১ এপ্রিল একসাথে শুনানি হবে।”
ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতে অভিযোগে এ মামলায় গত বছর ১৭ নভেম্বর বিএনপি নেতা এম এ মান্নানকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত।
পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা না দিলে তাকে আরও তিন মাস জেল খাটতে হবে বলে রায়ে জানানো হয়।
এ মামলায় গোলাম কিবরিয়া নামে আরেক আসামিকে খালাস দেওয়া হয় রায়ে। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কর্মচারী ছিলেন।
রায়ের পর মান্নান হাই কোর্টে আপিল করবেন জানিয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। পরে তিনি এ সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন।
অন্যদিকে দুদক তার সাজা বাড়াতে হাই কোর্টে রিভিশন আবেদন করে। সে আবেদনের শুনানির পরই হাই কোর্ট মঙ্গলবার রুল জারি করল।
দুদকের উপ সহকারী পরিচালক শামসুল আলম ২০১৬ সালের ২৩ জুন গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় মান্নান ও কিবরিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকাকালে ২০১৩ সালের ১৮ অগাস্ট থেকে ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৯৯৯টি ভুয়া ভাউচারে অনুদান ও ব্যয় দেখিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ত্রাণ এবং দরিদ্র তহবিল থেকে ৪৯ লাখ ১ হাজার ৮৪৮ টাকা আত্মসাৎ করেন এম এ মান্নান।
আর এ কাজে কিবরিয়া তাকে সহযোগিতা করেছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল।
২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারি দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। পরে গাজীপুরের বিশেষ জজ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিচারের জন্য ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে পাঠায়।
২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দুই আসামির বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ। বিচার প্রক্রিয়া শেষে গত বছর ১৭ নভেম্বর মান্নানকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেয় আদালত।
বিএনপি নেতা এম এ মান্নান ২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। তবে একের পর এক মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় তিনি নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।
কয়েক দফা সরকার তাকে বরখাস্ত করলেও তিনি উচ্চ আদালতের রায়ে মেয়রের চেয়ারে ফেরেন। ওই পাঁচ বছরের মধ্যে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হয়ে তাকে কারাগারেও যেতে হয়।