ক্যাটাগরি

করোনাভাইরাস: দৈনিক শনাক্তের হার ফের ৫% ছাড়াল

এর আগে সর্বশেষ ১০ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছিল, সেদিন ১ হাজার ৭১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নয়শর নিচেই ছিল।

সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর হারও আবার ৫ শতাংশের উপরে উঠে এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত একদিনে পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ।

দৈনিক শনাক্তের হার সর্বশেষ ৫ এর বেশি ছিল গত ১৮ জানুয়ারি। এরপর কমতে কমতে তা ৩ শতাংশের নিচেও নেমেছিল। তবে মার্চের শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শনাক্তের হারও বাড়তে থাকে।  

মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে ৮ হাজার ৪৮৯ জনে।

আর গত এক দিনে আরও ৯১২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৮৭ জন হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ২২৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫ হাজার ৩৪৯ জন হয়েছে।

বাংলাদেশে গতবছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর এ বছর ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ২৩ জানুয়ারি তা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১১ কোটি ৭১ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৬ লাখ।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৯তম অবস্থানে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৮টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৯টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৭২টি র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ২১৯টি ল্যাবে ১৭ হাজার ৭৭৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪১ লাখ ৮০ হাজার ৯৩৮টি নমুনা।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩২ লাখ ৭ হাজার ২৫৩টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৯ লাখ ৭৩ হাজার ৬৮৫টি।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের সবাই পুরুষ এবং সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন।

তাদের ৫ জন করে মোট ১০ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি ও ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।

মৃতদের মধ্যে ১০ জন ঢাকা বিভাগের এবং ১ জন করে মোট ৩ জন চট্টগ্রাম, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। 

দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৪৮৯ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৪২০ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ৬৯ জন নারী।

তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৭২৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ১০৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৬২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪২৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৪ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৫১ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৫৬৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৮১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৬৩ জন খুলনা বিভাগের, ২৫৫ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১১ জন সিলেট বিভাগের, ৩৬৪ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৯৬ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।