এ ঘটনায় সোমবার রাতে শিবচর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে
একটি মামলার করেছে ওই শিশুদের পরিবার।
এ
মামলার আসামি স্থানীয় আকমান ধুলু মিয়া মাদবরের ছেলে আকমান মাদবর (৫০)।
এর
আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সালিশে আকমান মাদবরকে তিন লাখ টাকা জরিমানা এবং বেত্রাঘাত
করে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা
হয়েছে।
শিবচর
থানার ওসি মিরাজ হোসেন বলেন, “যৌন নির্যাতনের ঘটনা কখনো সালিশে মীমাংসাযোগ্য নয়।
এটি গুরুতর একটি অপরাধ।
“সম্প্রতি যৌন নির্যাতনের ঘটনায় চেয়ারম্যানের সালিশ মীমাংসার খবর
পেয়েই এলাকায় থানার এক পরির্দশককে তদন্তে পাঠাই। আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।
“পরে নির্যাতনের শিকার ওই দুই শিশুর অভিভাবকরা থানায় এসে আকমান
মাদবরকে আসামিকে করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।”
আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে ওসি বলেন, “এ মামলায় ইউপি
চেয়ারম্যানের সালিশের কথা উল্লেখ করেন বাদী। আমরা চেয়ারম্যানের বিষয়টি তদন্ত করছি,
তিনি যদি এই ঘটনার বিচারের সরাসরি থাকেন তাহলে তিনিও আসামি হবেন।”
মামলার এজাহার ও স্থানীয়দের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, শিবচর
উপজেলার উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের একটি গ্রামে সম্প্রতি দশ বছরের বয়সী দুই মেয়েকে বাতাবি
লেবু খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে ঘরে নিয়ে যৌন নির্যাতন করেন আকমান মাদবর (৫০)।
অভিযোগে বলা হয়, পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে
উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ওরফে হায়দার হাওলাদার নির্যাতনের
শিকার ওই মেয়েদের বাড়ির উঠোনে সালিশ বৈঠক করেন।
সালিশে আকমান মাতবরকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও সালিশকারীরা
তাকে ১০টি বেত্রাঘাত এবং মারধর করেন; এবং চেয়ারম্যান এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন বলে
অভিযোগে বলা হয়।
ওই দুই শিশুদের মায়েরা বলেন, ঘটনা জানাজানি হলে চেয়ারম্যান ও তার
লোকজন বাড়ি গিয়ে সালিশ করেন। বাড়ির উঠানে সালিশকারীরা আকমানকে তিন লাখ টাকা
জরিমানা করেন ও মারধর করেন।
জরিমানার টাকার দায়িত্ব চেয়ারম্যান নিলেও সালিশ করার পরে প্রায় দুই
সপ্তাহ হয়ে গেলেও তারা কোনো টাকা পয়সা পাননি বলে অভিযোগ করেন।
সালিশের কথা স্বীকার করে উত্তর বহেরাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির
হোসেন বলেন, “সালিশে আমি তো মেইন (প্রধান) না। এলাকার মুরুব্বিরা এটার সালিশ নিয়ে
বসেন। আমাকে তারা আসতে বললে আমি যেখানে আসি।
“আমার কাছে প্রথমে মেয়ের পরিবার এলে আমি তাদের থানায় যেতে বলি;
কিন্তু তারা থানায় যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আকমান এলাকার শিশুদের যৌন হয়রানি করত, রেইপ করত।
তাই এলাকার মুরুব্বিরা তার বিচার করেছে, মুরুব্বিরা মিলে সিদ্ধান্ত নিছে। এটার
সাথে আমি সেভাবে জড়িত নই।”