আসাদুল মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) নবায়নের আবেদন করেছিলেন
গত জানুয়ারি মাসে। স্ত্রী-সন্তানসহ চারজনের সেই পাসপোর্ট দেওয়ার নির্ধারিত তারিখ পেরিয়ে
গেছে, অথচ পাসপোর্ট তাদের হাতে আসেনি।
আর তাতে ভোগান্তিতে পড়ার কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে
জানিয়েছেন আসাদুল।
“সন্তানের চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে হবে। তাই পাসপোর্ট
করতে দিয়েছিলাম। কিন্তু পাসপোর্ট পেতে দেরি হওয়ায় চিকিৎসার সময়ও পার হয়ে যাচ্ছে।”
চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে আসাদুলের মতো অনেকেই
এমআরপি পাসপোর্ট নবায়ন করতে দিয়ে কয়েক মাসেও হাতে পাচ্ছেন না। অনেক দেরিতে পেতে হচ্ছে।
উজ্জ্বল কান্তি ধর নামে একজন জানান, গত বছরের নভেম্বরে
তিনি তার এমআরপি নবায়ন করতে দিয়েছিলেন। ২০ দিন পর তার পাসপোর্ট পাওয়ার কথা থাকলেও তা
হাতে পেয়েছেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে।
অথচ হাবিবুর রব নামে একজন গত ২৬ জানুয়ারি ই-পাসপোর্টের
আবেদন করেছিলেন। তিনি জানান, ১৮ ফেব্রুয়ারি
তার পাসপোর্ট পাওয়ারে কথা থাকলেও ১৭ তারিখেই তা হাতে পেয়েছেন।
বাংলাদেশে হাতে লেখা পাসপোর্ট থেকে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট
বা এমআরপি প্রবর্তন হয়েছিল ২০১০ সালে।
কিন্তু এমআরপির ডেটাবেইজে ১০ আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণের ব্যবস্থা
না থাকায় এক ব্যক্তির নামে একাধিক পাসপোর্ট করার ঘটনা দেখা যায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে নাগরিক ভোগান্তি কমাতে এবং একজনের নামে
একাধিক পাসপোর্ট করার প্রবণতা বন্ধ করতে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) চালু হয়
এক বছর হল। তবে এমআরপিও চালু রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পাসপোর্ট প্রদান
তথ্যে দেখা গেছে, এমআরপির তুলনায় ই পাসপোর্ট দেওয়ার হার বেশি।
গত বছরের অক্টোবর থেকে এবছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ই
পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়েছে প্রায় সাড়ে ৩৫ হাজার। এর মধ্যে ২৭ হাজার পাসপোর্ট বিতরণ
হয়েছে।
পাশাপাশি তিন হাজার পাসপোর্ট ছাপানোর অপেক্ষায় আর অন্যগুলো
পুলিশ প্রতিবেদন বা অন্যান্য বিষয়ের জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে।
একইসময়ে এমআরপি পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়েছে ১৫ হাজার ৯৩টি।
এর অর্ধেক পাসপোর্ট বিতরণ হয়নি।
এমআরপিতে কেন দেরি- জানতে চাইলে বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা
অফিস, চট্টগ্রামের পরিচালক মো. আবু সাইদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুটি পাসপোর্ট
কার্যক্রম একসাথে চলার কারণে এমআরপি পাসপোর্ট পেতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।”
তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আবেদনকারীরা তাদের ই পাসপোর্ট
হাতে পেয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
পাসপোর্ট বিভাগ ই পাসপোর্ট নিতে উৎসাহিত করলেও নতুন চালু
এই পাসপোর্ট নেওয়াকে অনেকে বিড়ম্বনার ঝুঁকি মনে করছেন।
আবু সাইদ বলেন, “ই পাসপোর্ট নিয়ে শঙ্কার কিছুই নেই। এমআরপি
সুবিধা ই পাসপোর্টের সাথে সংযুক্ত আছে। পাশাপাশি এ পাসপোর্টে বইতে আরও কিছু বাড়তি সুযোগ-সুবিধা
আছে। আমরা এখন লোকজনকে ই পাসপোর্ট আবেদনের জন্য উৎসাহিত করছি।”
তিনি জানান, গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে তার কার্যালয়ে
১৯ হাজার ৭৭টি ই পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়েছে। এ সময়ে এমআরপি পাসপোর্ট আবেদন জমা পড়ে
৫ হাজার ৩২৯টি।
চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে জানুয়ারি
মাসে ই পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়ে ৫ হাজার ৭৫৩টি। তার বিপরীতে এমআরপি পাসপোর্টের আবেদন
জমা পড়ে ২হাজার ৭৯৬টি।