ক্যাটাগরি

খালের জমি উদ্ধারে ইউএসটিসি ভবনের একাংশ ভাঙা শুরু

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর জাকির হোসেন সড়ক সংলগ্ন ১৮ তলা ভবনে উচ্ছেদ
অভিযান শুরু হয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল
অনুষদ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ভবনটি।

সিডিএর স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে
‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’
প্রকল্পের আওতায় এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছ থেকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়ে ১৮ বছর আগে ওই ভবন নির্মাণের
কাজ শুরু করেছিল ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ।

১৩ হাজার বর্গফুটের ভবনটির নকশায় ১৬ তলার অনুমোদন থাকলেও ১৮ তলা পর্যন্ত
করা হয় বলে জানান সিডিএর কর্মকর্তারা।

নগরীর কাট্টলী এলাকার মহেশখালী খালের সঙ্গে যুক্ত গয়না ছড়া খালটি পাহাড়তলি
হয়ে ফয়’স লেকে গিয়ে শেষ হয়েছে। এটি প্রায় পৌনে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ।

সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় গয়না ছড়া খাল পুন:খনন, খাল পাড়ে
রাস্তা নির্মাণ ও সিল্ট ট্র্যাপ (বালির ফাঁদ) নির্মাণের কাজ চলছে।

ইউএসটিসি ভবনের পেছনে এসে প্রকল্পের কাজ থমকে যায়।

খালের জমিতে নির্মিত ভবনটির অংশ ভেঙে তারপর বাকি কাজ করা হবে বলে বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী
আহমদ মঈনুদ্দিন।

তিনি বলেন, “ভবনটি মোট ১৩ হাজার বর্গফুটের। এর মধ্যে চার হাজার বর্গফুটের
মতো ভাঙা হবে। যে জমিতে ভবন নির্মাণের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল সেখানে খালি রেখে খালের
জমিতে ভবনের একাংশ নির্মাণ করা হয়েছে।

“২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে এ বিষয়ে ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ
করি। তখন তারা সময় চাইলেও ভবনের এ অংশটি অপসারণ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে অপসারণ করতে হচ্ছে।”

বুধবার সকালে চারটি বুলডোজার ও অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু
হয়। এসময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদেরও সেখানে দেখা গেছে।

অভিযান পরিচালনাকারী সিডিএর স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল
আলম চৌধুরী বলেন, “২০১৯ সালে যখন আমরা এসেছিলাম তখন তারা হাজারখানেক শিক্ষার্থী নিয়ে
আমাদের সামনে দাঁড়িয়েছিল। দুই মাস সময় চাইলে আমরা তিন মাস সময় দিয়েছিলাম।

“তারপর ১৪ মাস সময় পেরিয়ে গেছে। অবৈধ স্থাপনা রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
পাঠদান কাম্য নয়। জাতীয় স্বার্থে অবৈধ অংশ অপসারণ করা হচ্ছে। আজও শিক্ষার্থীদের জড়ো
করার চেষ্টা করেছিল বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য। অভিভাবকদের কষ্টার্জিত অর্থে
তারা লেখা পড়া করে।”

১৮ তলা ভবনের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত পুরো অংশ অপসারণ করতে ১০-১২ দিন লাগতে
পারে বলে জানান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার
কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী।

তিনি বলেন, “যেহেতু ভবনের ছাদ ঢালাই করা তা উপর থেকে কেটে নিচের দিকে নামতে
হবে। তা না হলে পুরো ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আগেই তারা নিজেরা অপসারণ করলে আমাদের
উচ্ছেদ করতে হত না।”

এ বিষয়ে ইউএসটিসির উপাচার্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা
হলে তিনি বলেন, “রেলওয়ে থেকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেওয়া জমিতে সিডিএর অনুমতি নিয়ে ভবনটি
করা হয়। এতদিন পর তারা ভবন ভাঙতে এসেছে।”

নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে খালের জমিতে ভবনের একাংশ নির্মাণ এবং সময় নিয়েও অপসারণ
না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ‘পরে এ বিষয়ে কথা বলবেন’ বলে জানান।