ভারতের রায়পুরে রোড
সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজে বুধবার রাতে বাংলাদেশ লেজেন্ডসের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা লেজেন্ডসদের
জয় ৪২ রানে।
দারুণ খেলেও অবশ্য
একটু আক্ষেপ থাকার কথা থারাঙ্গার। ১ রানের জন্য যে পাননি সেঞ্চুরি!
মাত্রই সপ্তাহ দুয়েক
আগে অবসরে যাওয়া ব্যাটসম্যান আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২৬ ম্যাচ খেলেও কোনো ফিফটি
পাননি। এবার সাবেকদের লড়াইয়ে এই বাঁহাতির ব্যাট থেকে এলো ৪৭ বলে ৯৯ রানের অপরাজিত ইনিংস।
শ্রীলঙ্কা ২০ ওভারে তোলে ১৮০ রান।
বাংলাদেশ রান তাড়ায়
শুরুটা দারুণ করলেও পরে পথ হারিয়ে বাংলাদেশ করতে পারে ১৩৮ রান।
প্রথম ম্যাচে ১ রানের
জন্য ফিফটি ছুঁতে না পারলেও ওপেনার নাজিমউদ্দিন এবার করেন ৪১ বলে ৫৪।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে
নামা লঙ্কানদের শুরুতে বেশ শান্তই রাখতে পেরেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। তিলকরত্নে দিলশান
ও সনাৎ জয়াসুরিয়া প্রথম ৫ ওভারে তুলতে পারেন কেবল ২৯ রান। পাওয়ার প্লেতে ২ ওভার বোলিং
করে মোহাম্মদ শরীফ দেন মাত্র ৯ রান।
রাজিন সালেহ আক্রমণে
আসার পর লঙ্কানদের রানের গতি বাড়ে। উইকেটও ধরা দেয়। টানা দুটি বাউন্ডারির পর রাজিনের
অফ স্পিনে এলবিডব্লিউ হন দিলশান (২৩ বলে ৩৩)।
জয়াসুরিয়া মাঠ ছাড়েন
পায়ে টান লাগায় (১১ বলে ৪)। এরপর থারাঙ্গা ও চামারা সিলভার জুটি এগিয়ে নেয় লঙ্কানদের।
প্রথম বলেই অবশ্য
সুযোগ দিয়েছিলেন থারাঙ্গা। তার ক্যাচ নিতে পারেননি জাভেদ ওমর বেলিম। সেটির বড় খেসারত
দিতে হয়। রান বাড়ানোর কাজটি মূলত করেন থারাঙ্গাই।
দুই বাঁহাতি স্পিনার
আব্দুল রাজ্জাক ও অধিনায়ক মোহাম্মদ রফিক দারুণ বোলিং করে রানের গতি আটকে রাখতে পেরেছিলেন।
কিন্তু থারাঙ্গা চড়াও হন রাজিন সালেহ ও অন্য বোলারদের ওপর।
১০ ওভারে শ্রীলঙ্কার
রান ছিল ৭০। পরে বানের জলের মতো আসতে থাকে রান। থারাঙ্গার তাণ্ডবে শেষ ৪ ওভারে আসে
৬১ রান!
আলমগীর কবিরের এক
ওভারে ২০ রান নেন থারাঙ্গা। শেষ ওভারে মুশফিকুর রহমান বাবুকেও মারেন ২ ছক্কা ও ১ চার।
সেঞ্চুরির জন্য শেষ বলে তার প্রয়োজন ছিল ২ রান। সিঙ্গেল নিতে পারলেও দ্বিতীয় রানের
চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান তার সঙ্গী নুয়ান কুলাসেকেরা।
১১ চার ও ৫ ছক্কায়
৯৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়তে হয় থারাঙ্গাকে।
বাংলাদেশের রান তাড়ার
শুরুটায় ছিল চ্যালেঞ্জ জানানোর ইঙ্গিত। নাজিমউদ্দিন ও মেহরাব হোসেন পাওয়ার প্লের ৬
ওভারে দলকে এনে দেন ৫৪ রান।
আসরে প্রথম খেলতে
নেমে মেহরাব খেলেন ক্যারিয়ারের সেরা সময়কে মনে করিয়ে দেওয়া কয়েকটি শট। নাজিমউদ্দিনও
শুরু করেন আগ্রাসী।
লঙ্কান অধিনায়ক দিলশান
বোলিংয়ে এসে ভাঙেন এই জুটি। ছক্কার চেষ্টায় লং অন সীমানায় ধরা পড়েন মেহরাব (২৭)।
এরপর আর গতি পায়নি
দলের ইনিংস। ৯ বলে ২ করে দিলশানের বলে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে আউট হন হান্নান সরকার।
মোহাম্মদ রফিক ৪ রান করতে খেলেন ১০ বল। তিনিও দিলশানের শিকার।

বাংলাদেশের হয়ে আবারও দারুণ ব্যাট করেন নাজিমউদ্দিন। ছবি : টুইটার।
দিলশানকে ছক্কা মেরে
নাজিমউদ্দিন ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৪ বলে। খানিকপর আউট হয়ে যান তিনিও। শেষ দিকে খালেদ
মাসুদের ২২ বলে অপরাজিত ২৮ রানের ইনিংসে কিছুটা কমে ব্যবধান।
এই হারের আগে ভারত
ও ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। শেষ দুই ম্যাচে শুক্রবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ লেজেন্ডস, সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকা লেজেন্ডস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা লেজেন্ডস : ২০ ওভারে ১৮০/৬ ( তিলকরত্নে দিলশান
৩৩, সনাৎ জয়াসুরিয়া ৪ (আহত অবসর), উপুল থারাঙ্গা ৯৯*, চামারা সিলভা ২৪, ফারভিজ মাহারুফ
১২, দুলাঞ্জনা বিজেসিংহে ০, রাসেল আর্নল্ড ১, কুলাসেকারা ১; মোহাম্মদ শরীফ ৪-০-৩০-১,
আলমগীর কবির ৪-০-৩৬-০, আব্দুর রাজ্জাক ৪-০-২১-০, রাজিন সালেহ ৪-০-৪৮-১, মোহাম্মদ রফিক
৪-০-২৪-১, মুশফিকুর রহমান ১-০-২০-০)।
বাংলাদেশ লেজেন্ডস: ২০ ওভারে ১৩৮/৬ (নাজিমউদ্দিন ৫৪, মেহরাব হোসেন ২৭,
হান্নান সরকার ২, মোহাম্মদ রফিক ৪, মুশফিকুর রহমান ৫, খালেদ মাসুদ ২৮*, রাজিন সালেহ
৫, জাভেদ ওমর ২*; নুয়ান কুলাসেকারা ২-০-১৭-০, দাম্মিকা প্রসাদ ৪-০-২২-২, থিলান তুষারা
৪-০-৩২-০, ফারভিজ মাহারুফ ৪-০-১৫-০, তিলকরত্নে দিলশান ৪-০-২১-৩, রাসেল আর্নল্ড ২-০-২৪-১)।
ফল: শ্রীলঙ্কা লেজেন্ডস ৪২ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: উপুল থারাঙ্গা।