বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়ার
প্রশ্নই ওঠে না।”
কোম্পানীগঞ্জ
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় মঙ্গলবার
সন্ধ্যায় বসুরহাট পৌর এলাকার রূপালী চত্বরে প্রতিবাদে সমাবেশ চলাকালে পৌর মেয়র
আবদুল কাদের মির্জা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের
মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
সংঘর্ষ
চলাকালে ব্যাপক ভাঙচুর ও বোমাবাজি চলে; মো.
আলাউদ্দিন নামে একজন নিহত হন, আহত হন অন্তত ৪০ জন,
তাদের অন্তত ১৫ জনের শরীরে ছররা গুলির চিহ্ন ছিল।
কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। তিনি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের
সহসভাপতি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।
সম্প্রতি বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনের সময়
বিভিন্ন বিস্ফোরক বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন কাদের মির্জা। তখন থেকেই কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের মধ্যে উত্তেজনা চলছে, যা
সাম্প্রতিক সময়ে মোড় নিয়েছে সংঘাতের দিকে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “প্রাণঘাতী সংঘর্ষে একজন দলীয় কর্মী নিহতের
ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কোম্পানীগঞ্জের ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে। বিশৃঙ্খলার সাথে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের পরিচয় না দেখে আইনের আওতায়
আনা হবে।”
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলার চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে
ওই দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন
মুজাক্কির গুলিবিদ্ধ হন, পরদিন ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।
আলাউদ্দিন ও মুজাক্কিরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তাদের
পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
কোম্পানীগঞ্জের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত
নিন্দনীয় এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি’ হিসেবে বর্ণনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ইতোমধ্যে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের আইজিপি, র্যাবের ডিজি, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ও জেলা
পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা হয়েছে। আইন সমানভাবে প্রযোজ্য, ইতোমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত
অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অভিযান চলছে।”
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনকে কারো অপকর্মের
জন্য ম্লান হতে দিতে পারি না। এ দুঃখজনক ঘটনার বিচার কাজ তদন্ত করে রিপোর্ট গঠনের জন্য
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, রিপোর্ট এলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ
সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
নিজের নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জের জনগণকে পরিস্থিতি মোকাবেলায়
ধৈর্য ধারণ এবং সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, “সরকার এখন কঠোরভাবে
ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করছে, তাই আশা করা হচ্ছে শিগগিরই জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে বিএনপি মহাসচিব যে মন্তব্য করেছেন,
তারও সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেননি বরং জাতির সামনে
ইতিহাসের প্রমাণিত সত্য তুলে ধরেছেন। বিএনপি কখনো সত্য শুনতে চায় না,তাই ঐতিহাসিক সত্য
প্রকাশে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।”
বিএনপি জিয়াকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার‘
প্রাণান্ত অপপ্রয়াস’ চালিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “স্বাধীনতার ঘোষণা
আর ঘোষণা পাঠ করা এক কথা নয়।পাঠক কখনো ঘোষক হতে পারে না।”