বুধবার সচিবালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে গঠিত নিরাপত্তা বিষয়ক উপকমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী
উদযাপন উপলক্ষ্যে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী
ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠান হবে।
“অনুষ্ঠানে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সরকারের নেওয়া স্বাস্থ্যবিধি
মেনে চলার অনুরোধ করা হল। সবাইকে অনুষ্ঠানস্থলে গেলে নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে নিয়ে
যেতে হবে।”
পরে এ বিষয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী
উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, “আমরা
যে আয়োজনটা করছি এখানে সীমিত আকারে করছি। যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে হচ্ছে সেজন্য
বড় আকারে জনসমাগম করা হচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, সেজন্য যারা
দাওয়াত পাবেন আমরা প্রত্যেককে বলে দিচ্ছি কোভিড টেস্ট করাতে হবে, এটা বাধ্যতামূলক।
এটার মেয়াদ থাকবে ৪৮ ঘ্ণ্টা। নেগেটিভ রিপোর্টটা তারা সঙ্গে নিয়ে আসবেন, যাতে সেখানে
অন্য কোনো পরিস্থিতি না হয়।
“আমরা কোভিড পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুন্দর অনুষ্ঠান
করতে চাই, যাতে আমরাও দেখাতে চাই, এই রকম একটা অনুষ্ঠান করার সক্ষমতা এই রকম পরিস্থিতিতে
আমাদের আছে।”
কামাল আব্দুল নাসের বলেন, “পুরো প্রোগ্রামটি সারা পৃথিবীতেই
সম্প্রচার করা হবে, সেভাবে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা বড় ধরনের প্রোগ্রাম এবং সবাই
যাতে দেখতে পারে। সেজন্য একটা প্রোডাকশন টিমও কাজ করছে।
“বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানরা আসবেন, সেই দিনগুলোতে
আমরা বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছি, তখন সীমিত আকারে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন
সেক্টরে ৫০০ এর মত অতিথিকে দাওয়াত দেওয়া হবে। ভাগ করে করে এই দাওয়াত দেওয়া হবে, এতে
যতটুকু কভার করা যায়।”
তিনি বলেন, “১০ দিনের অনুষ্ঠানে ফিজিক্যালি হচ্ছে চারদিন।
ওই চারদিনের অনুষ্ঠানেই আমন্ত্রিত অতিথিরা থাকবেন। বাকি ছয়দিন প্রোগ্রামটা সরাসরি করব।
সেখানে কাউকে আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি না। তবে চারদিনের অনুষ্ঠানও সরাসরি সম্প্রচারিত
হবে। এখন পর্যন্ত এইভাবেই অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে।”
কতগুলো দেশ থেকে আমন্ত্রিতরা আসবেন জানতে চাইলে প্রধান সমন্বয়ক
বলেন, দাওয়াত দেওয়ার বিশাল একটা তালিকাও করেছি। স্বাস্থ্যবিধি সিরিয়াসলি পালন করা হবে।
“বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিশিষ্টজনরা ভিডিও
বার্তার মাধ্যমে সম্পৃক্ত হবেন। প্রতি মুহূর্তে অনেকে আসার আগ্রহ প্রকাশ করছেন, যেটা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে। আমরা বিষয়টি হয়ত জানিয়ে দেব, পরবর্তী দিন কারা
সংযুক্ত থাকছেন। এতে সবার দেখার আগ্রহও থাকবে।
ভারত ও শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী,
মালদ্বীপ ও নেপালের রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
নিরাপত্তার বিষয়ে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী
বলেন, “দশদিনব্যাপী ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠান করা হবে। অনুষ্ঠানে এই পর্যন্ত চারজন রাষ্ট্রপ্রধান
ও সরকার প্রধান অংশ গ্রহণ করবেন বলে আমরা জেনেছি।”
অনুষ্ঠানস্থলের নিরাপত্তা
ছাড়াও রাষ্ট্রপ্রতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ
ব্যক্তিদের ধানমন্ডি জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার সময় সার্বিক নিরাপত্তা
ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
“বিদেশি কূটনৈতিকদের
সব অনুষ্ঠানে আনা-নেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপ্রধান,
সরকার প্রধান, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং যেসব
হোটেলে তারা অবস্থান করবেন সেই হোটেলগুলো ভেতরে ও বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“সব অনুষ্ঠানে গোয়েন্দা
নজরদারি থাকবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করার জন্য একটি কন্ট্রোল রুম থাকবে। তাছাড়া
যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রোধে প্রয়োজনে ৯৯৯ সেবা সার্ভিস সব সময় চালু থাকবে।
অনুষ্ঠানস্থলে বিদ্যুৎ থেকে শুরু সব ইউটিলিটি সেবা দেওয়া হবে।”
বিদেশি রাষ্ট্র ও সরকার
প্রধানরা ঢাকার বাইরে যেসব স্থান বা অনুষ্ঠানে যাবেন, সেখানেও গোয়েন্দা নজরদারি ও নিরাপত্তা
ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী
ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা ও ইউনিয়ন
পর্যায়ে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালায়ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর
আহমেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।