বনানীতে
দলীয় চেয়ারপার্সনের কার্যযালয়ে বুধবার এক সভায় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, “একানব্বই
সালের পর থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংবিধান সংশোধন করে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে
একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। যারা ক্ষমতায় যাচ্ছে তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দলবাজি
ও টেন্ডারবাজি করে আঙুল ফলে কলাগাছ হচ্ছে। দেশের হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে।
যারা ক্ষমতায় থাকে তারা আইনের ঊর্ধ্বে থেকে দুর্নীতি করে।
“সরকার
দলীয়দের বিরুদ্ধে কোনো আইন নেই, আইন শুধু বিরোধীদের জন্য প্রয়োগ হচ্ছে। আওয়ামী লীগের
হাত থেকে রাষ্ট্রক্ষমতা বিএনপির হাতে গেলে শুধু কালেক্টর পরিবর্তন হবে, টাকার অংক বাড়বে
কিন্তু জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য দেশের জনগণ জাতীয় পার্টিকে
রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই দলকে সুসংহত করতে হবে।”
চেয়ারম্যানের
উপদেষ্টা এবং ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জি এম কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগ
ও বিএনপি সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রের মূলে কুঠারাঘাত করেছে। দুর্নীতি, লুটপাট
আর বৈষম্য সৃষ্টি করে দেশের সুশাসন ধ্বংস করেছে দুটি দল।”
সংসদীয়
গণতন্ত্রের সমালোচনা করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, “সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে সংবিধানে
৭০ ধারা সংযোজন করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এখন এক ব্যক্তির হাতে নির্বাহী
বিভাগ, আইন সভা এবং নিম্ন আদালত। আর উচ্চ আদালতের নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় শতভাগই রাষ্ট্রপতির
মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হাতেই। কারণ, প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা ব্যতিরেকে রাষ্ট্রপতি
কোনো সিদ্ধান্তই নিতে পারছেন না। এক ব্যক্তির হাতে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার কারণে একনায়কতন্ত্র
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা স্বৈরতন্ত্র।”
নেতাকর্মীদের
উদ্দেশে তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টি কোনো জোটে নেই। নির্বাচনে কিছু আসনে ইলেকশন অ্যারেজমেন্ট
হয়েছিল কিন্তু বেশির ভাগ আসনেই আমাদের প্রার্থীরা লড়াই করেছে। নির্বাচনের পর থেকে আমরা
বিরোধী দলের ভূমিকায় আছি। আমরা দেশ ও মানুষের কল্যাণে কথা বলবই। আমরা আমাদের রাজনীতি
নিয়ে এগিয়ে যাব।”
ভাগাভাগির
কারণে নোয়াখালীর বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে মন্তব্য করে জি এম
কাদের বলেন, দেশের মানুষ এই ভাবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়।
দলের
মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, “বর্তমান সরকারের আমলে নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস
হয়ে গেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো কলুষিত করেছে বর্তমান সরকার। বিএনপি দুর্নীতি
ও দুঃশাসনের যে অপরাজনীতি শুরু করেছিলো বর্তমানে আওয়ামী লীগ তা চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে
গেছে।
“দেশে
বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা নেই, দেশের মানুষ কথা বলতে পারছে না। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন
দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের সংশোধন চাই।”
সভায়
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মুজিবুল হক চুন্নু,
বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা, চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী মীর আব্দুস
সবুর আসুদ প্রমুখ।