তেজগাঁওয়ে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সেই আয়োজনে পাঁচ দিন পাঁচশ জন করে অতিথি উপস্থিত থাকার সুযোগ পাবেন, বাকি দিনগুলোর অনুষ্ঠান সীমাবদ্ধ থাকবে সরাসরি সম্প্রচারে।
শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ ১০ দিনের এই আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠানমালায় প্রতিদিন আলাদা থিমভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, অডিও-ভিজুয়াল এবং অন্যান্য বিশেষ পরিবেশনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
আমন্ত্রিত অতিথিদের অনুষ্ঠানের আগের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ‘করোনাভাইরাসমুক্ত’ সনদ নিতে হবে। পরীক্ষার জন্য পাঁচটি কেন্দ্রও ঠিক করে দিয়েছে বাস্তবায়ন কমিটি।
আইইডিসিআর, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয় ক্লিনিকে এই পরীক্ষা করা যাবে।

কামাল চৌধুরী বলেন, পাঁচ দিনের আয়োজনে প্রতিবেশী পাঁচ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। তাছাড়া ভিডিওবার্তা দেবেন বেশ কয়েকটি দেশের নেতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা।
১০ দিনের আয়োজনে প্রতিদিনই আলোচনা সভার সঙ্গে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকবে। বাংলাদেশি শিল্পীদের পাশাপাশি প্রতিদিন একেকটি দেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে।
প্যারেড গ্রাউন্ডে কেন্দ্রীয় আয়োজনের পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে আলোকসজ্জা, আতশবাজি ও লেজার শো হবে।
কামাল চৌধুরী বলেন, ১৭, ১৯, ২২, ২৪ এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান বিকাল সাড়ে ৪টায় শুরু হয়ে চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
অন্যান্য দিন বিকাল সোয়া ৫টায় শুরু হয়ে রাত ৮টায় শেষ হবে। প্রতিদিনের অনুষ্ঠানে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৩০ মিনিটের বিরতি থাকবে।
যা যা আয়োজন
১৭ মার্চ
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের আয়োজনের থিম: ’ভেঙেছ দুয়ার এসেছে জ্যোতির্ময়’
প্যারেড গ্রাউন্ডে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ
ভিডিওতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো
বাংলাদেশের শিল্পীদের সঙ্গে থাকবে ভারতীয় একটি সাংস্কৃতিক আয়োজন
১৮ মার্চ
থিম: ‘মহাকালের তর্জনী’
অনুষ্ঠানে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন ভিডিও বার্তা দেবেন।
ভিয়েতনামের শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দেখানো হবে
১৯ মার্চ
থিম: ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সম্মানিত অতিথি হিসাবে প্যারেড গ্রাউন্ডে উপস্থিত থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
শ্রীলঙ্কা একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপহার দেবে।
২০ মার্চ
থিম: ’তারুণ্যের আলোকশিখা’
এদিন ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল ড. ইউসেফ আহমেদ আল-ওথাইমিন ভিডিও বার্তা দেবেন।
পরিবেশিত হবে জাপানের সাংস্কৃতিক আয়োজন।
২১ মার্চ
থিম: ’ধ্বংসস্তুপে জীবনের গান’
কয়েকজন বিদেশি অতিথি ভিডিওবার্তা দেবেন। তবে কারা দেবেন তা ঠিক হয়নি।
মালয়েশিয়া, ব্রুনেইয়ের মত আসিয়ানভুক্ত দেশ থেকে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখানো হবে।
২২ মার্চ
থিম: ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’
নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান হবে প্যারেড গ্রাউন্ডে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।
ভিডিওবার্তা দিবেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় থাকবেন নেপালের শিল্পীরা।
২৩ মার্চ
থিম: ’নারীমুক্তি, সাম্য ও স্বাধীনতা’
ইউনোস্কোর মহাপরিচালকসহ অন্যরা ভিডিওবার্তা দিতে পারেন।
দেখানো হবে সুইজারল্যান্ডের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
২৪ মার্চ
থিম: ’শান্তি-মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’
প্যারেড গ্রাউন্ডে সম্মানিত অতিথি থাকবেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।
ভিডিওবার্তা দেবেন পোপ ফ্রান্সিস।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় থাকবেন ভুটানের শিল্পীরা।
২৫ মার্চ
থিম: ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রা’
ভিডিওবার্তা দেবেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চাং সিয়ে-কিয়ুন এবং বাংলাদেশের জাপানি বন্ধু তাকাশি হাওয়াকাওয়ার ছেলে ওসামু হাওয়াকাওয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দেখানো হবে
২৬ মার্চ
থিম: ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
উন্মোচন হবে সুবর্ণজয়ন্তীর লোগো
সম্প্রচার হতে পারে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর থিম সং
ভারতের পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে তৈরি ‘মৈত্রী’ নামে বিশেষ রাগ পরিবেশিত হবে।
বাংলাদেশে উদ্বোধন হবে ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল মিউজিয়াম’
মুজিববর্ষের সাংস্কৃতিক আয়োজনের সমন্বয়কারী সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রতিদিনই দেশি শিল্পীদের পাশাপাশি বিদেশি কোনো দেশের পরিবেশনা থাকবে। জাতীয় শিল্পীদের সঙ্গে তৃণমূলের শিল্পীদেরও সন্নিবেশ করা হবে।
”গান, নাটক, যন্ত্র শিল্প এবং কবিতাসহ সংস্কৃতির প্রতিটি শাখাকে আয়োজনে নিয়ে আসার কাজ করছি আমরা।”
থিমেটিক আলোচনায় বাংলাদেশিদের পাশাপাশি বিদেশি আলোচকদের সম্মিলন ঘটানো হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।