ক্যাটাগরি

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী নির্যাতন আইনের লঙ্ঘন: শিক্ষামন্ত্রী

তিনি বলেছেন,
“যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত করা বা কোনো ধরনের নির্যাতন সর্বোচ্চ
আদালতের আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ। ইদানিং মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ভিডিও
ইন্টারনেটে ভাইরাল হচ্ছে। যেকোনো ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই হোক, এটা আইনের লঙ্ঘন।”

জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ
মাদ্রাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী
এ কথা বলেন।

সম্প্রতি
চট্টগ্রামে এক মাদ্রাসায় আট বছর বয়সী শিক্ষার্থী তার মায়ে পেছন পেছন যাওয়ায় শিক্ষক
তাকে বেদম মারধর করেন। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাস হলে ওই শিক্ষককে
গ্রেপ্তার করা হয়। 

পড়া না
পারায় ছাত্রকে পিটিয়ে জখম করায় গত বুধবার ময়মনিসংহের নান্দাইলে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে
সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এছাড়া বিভিন্ন
সময় মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় গণমাধ্যমে আসে। 

শিক্ষামন্ত্রী
দিপু মনি বলেন, “শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। তাদের আচার-আচরণ ও ব্যবহারে সচেতন হওয়া
উচিত। কোথাও কোথাও যৌন হয়রানি ও নিগ্রহের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এগুলো প্রতিরোধ
করতে হবে। আমরা সবাই সমাজের অংশ, সবাই যার যার জায়গা থেকে শিক্ষার্থীদের নিগ্রহের হাত
থেকে রক্ষা করতে হবে।”

মাদ্রাসা
শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করার জন্য সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চতুর্থ
শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। এর জন্য বড় হাতিয়ার
হল শিক্ষা। সেই শিক্ষা হতে হবে নৈতিকতা সম্পন্ন। সেই সাথে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, দক্ষতা
ও মানসিকতার সমন্বয় থাকতে হবে।

“মাদ্রাসা
শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে তারা যাতে
পিছিয়ে না থাকে, সেজন্য আমরা কাজ করছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে ভুল পথে পরিচালিত
না হয়, সেদিকেও সজাগ থাকতে হবে।”

ইসলামের
কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা ইসলামের কল্যাণে
কাজ করেছেন। তার কন্যাও শান্তির বাণীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে ইসলামের খেদমত করছেন। ইসলামের
সাথে বিজ্ঞান- প্রযুক্তির সংঘাত নেই। যারা ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা করে মানুষকে বিভ্রান্ত
করছে, ইসলামের দোহাই দিয়ে অপকর্ম করছে, তাদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে।”

আলোচনা
সভায় মাদ্ররাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণের দাবি জানানো হয়।

এবিষয়ে
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এটা একটা বড় বিষয়। এর জন্য সরকারের সক্ষমতা যাচাই করতে সমীক্ষা
প্রয়োজন। আমরা বিষয়টা খতিয়ে দেখব।”

অনুষ্ঠানে
অংশ নিয়ে জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, “স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের
অর্ধেক সময় দেশ নেতৃত্বহীনতায় ভুগেছিল। দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে দিয়েছিল
তারা। আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যার যোগ্য নেতৃত্ব বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
এই অগ্রযাত্রাকে গুজব, ষড়যন্ত্র দিয়ে থামানো যাবে না।”

অনুষ্ঠানে
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মাদ্রাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুন
অর রশিদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস। দল-মত নির্বিশেষে তিনি নক্ষত্রের
নাম। বঙ্গবন্ধুর মাধ্যমেই বাংলাদেশে মাদ্রাসা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তার হাতেই ইসলামি
ফাউন্ডেশন গড়ে উঠেছে। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মাদ্রাসার উন্নয়নে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।”

তিনি বলেন,
“নয় বছর পরে দুই হাজার সাতশ ত্রিশটি বেসরকারি মাদ্রাসা এমিপওভুক্ত করা হয়েছে। স্বাধীনতার
পঞ্চাশ বছরে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে সেই আশা আমাদের। মাদ্রাসা শিক্ষা
ব্যবস্থায় বিজ্ঞান শিক্ষা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিজ্ঞানময় করতে
আমরা অনুরোধ করছি।”

অনুষ্ঠানে
অন্যদের মধ্যে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু, গ্লোবাল
ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আরজুমান বানু নার্গিস বক্তব্য দেন।