আইপিএল বনাম জাতীয় দল নিয়ে ইংলিশ ক্রিকেট উত্তপ্ত বেশ কিছুদিন ধরেই। আইপিএলে
খেলার কারণে এবার ইংলিশ গ্রীষ্মে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে নাও খেলতে পারেন
ইংল্যান্ডের কয়েকজন ক্রিকেটার। এছাড়া জৈব-সুরক্ষা বলয়ের মানসিক ধকল থেকে মুক্ত রাখতে
ভারত সিরিজের মতো গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়েও ইংলিশ ক্রিকেটারদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানো হচ্ছে।
অথচ লম্বা আইপিএলে গতবছর ইংলিশরা খেলেছেন ও এবারও খেলবেন টানা।
সব মিলিয়েই ইংল্যান্ডে চলছে আলোচনার ঝড়। ইংলিশ গ্রেট জেফ বয়কট তো সরাসরিই
বলেছেন, জাতীয় দল রেখে আইপিএল খেললে বেতন কেটে রাখতে। জাইলস ও অন্যান্য ইংলিশ ক্রিকেটের
কর্তাদেরও শূলে চড়িয়েছেন তিনি ক্রিকেটারদের কাছে নতজানু হওয়ায়।
তবে এসবে অবস্থান নড়চড় হচ্ছে না ক্রিকেটার-কর্তাদের। সিনিয়র ক্রিকেটার জস
বাটলার কদিন আগে সরাসরিই বলেছেন, আইপিএল খেললে আর্থিক ও ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতায় কতটা লাভবান
হন তারা। এবার ক্রিকেটীয় প্রাপ্তির কথা বললেন জাইলসও।
স্কাই স্পোর্টসে সাবেক ব্যাটসম্যান রবার্ট কি ও সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক
নাসের হুসেইনের সঙ্গে ‘দা হুসেইন অ্যান্ড কি ক্রিকেট শো’-তে জাইলস তুলে ধরলেন তার যুক্তি।
“ক্রিকেটারদের সঙ্গে আমার আলোচনায় তাদেরকে বলেছি সূচি নিয়ে সতর্কভাবে ভাবতে।
তাদেরকে নির্দেশনা দেইনি আমি। কোনোটিই আমরা চাপিয়ে দিচ্ছি না। আইপিএল কোথাও চলে যাচ্ছে
না। আইপিএল থেকে আমরা দারুণভাবে লাভবান হয়েছি। এই দল থেকে সম্ভবত, আমার মনে হয়, ১২
থেকে ১৬ জন আইপিএলে খেলছে।”
“আগে আমাদের ক্রিকেটারদের জন্য আইপিএলের অভিজ্ঞতা নেওয়া কঠিন ছিল। সুযোগ
পেত না। এখন আমাদের সব ক্রিকেটারের সেখানে প্রবল চাহিদা এবং এটিই সম্ভবত বড় একটি কারণ,
সাদা বলের দুই সংস্করণেই আমরা কেন এখন এক নম্বর।”
আইপিএলের কারণে ইংল্যান্ডের টেস্ট খেলতে না পারার প্রেক্ষাপটও তুলে ধরলেন
জাইলস।
“আইপিএলে খেলার ব্যাপারে ক্রিকেটাদের সঙ্গে আমরা একমত হয়েছিলাম। ওই টেস্ট
দুটি (নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে) যোগ হয়েছে পরে, আগের সূচিতে ছিল না। আইপিএল ও ক্রিকেটারের
সঙ্গে আমরা আগেই একমত হয়েছি যে তারা পুরো টুর্নামেন্টে খেলবে।”
“আমরা সেখান থেকে সরে আসিনি এবং আমি মনে করি, সরে আসা উচিতও নয়। অন্তত
চুক্তির দিক থেকে হলেও সেখানে অটল থাকা উচিত।”
ক্রিকেটারদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানোর সিদ্ধান্তও অনেক ভেবে-চিন্তে নেওয়া
হয়েছে বলে ব্যাখ্যা করলেন সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার।
“আমরা সমন্বয় করে এমন একটি জায়গায় যেতে চাইছি, যেখান থেকে টেকসই সাফল্য
পেতে পারি। বছরের শেষ নাগাদ দুটি কৌশলগত লক্ষ্যের দিকে আমরা এগোতে চাই, টি-টোয়েন্টি
বিশ্বকাপ ও অ্যাশেজ। এখনও অনেক কিছু পাওয়ার আছে আমাদের। সাদা বলের দুটি বিশ্বকাপ ট্রফিই
পেতে চাই আমরা এবং অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজ জিততে চাই।”
“আমাদের মূল দুশ্চিন্তা ক্রিকেটারদের ওয়ার্কলোড ও সূচি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
ও অ্যাশেজে আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরো ফিট এক দল ক্রিকেটারকে নিয়ে যেতে চাই। এখনই
সত্যিকারের পদক্ষেপ না নিলে সেটা সম্ভব নয়। আমি এখনও বিশ্বাস করি, অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে
আমরা চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি। সেটাই এখনও পর্যন্ত আমাদের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।”