শুক্রবার দুপুরে আখাউড়া
স্থলবন্দরের চেক পোস্টে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার মো. জোবায়েদ হোসেন এই
দুজনকে আখাউড়ার ইউএনও মো. নূরে আলমের কাছে হস্তান্তর করেন।
এরা হলেন শায়েস্তারা
বেগম (৫১) ও সমীর কুমার মজুমদার (৩৩)।
প্রায় ১৩ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
একটি হাসপাতাল থেকে শায়েস্তারা বেগম (৫১) হারিয়ে যান এবং প্রায় আট বছর আগে ফরিদপুর
থেকে সমীর কুমার মজুমদার (৩৩) হারিয়ে যান।
তবে তারা কীভাবে আগরতলা
গিয়েছেন তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ।
সহকারী হাই কমিশনার
জোবায়েদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, শায়েস্তারা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার দেলী
গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। আর সমীর কুমার মজুমদার ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার
ঝুমারকান্দা গ্রামের শশীধর মজুমদারের ছেলে।
“দীর্ঘদিন ধরে তারা
আগরতলার মডার্ন সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে চিকাৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তীতে মানবাধিকারকর্মী
খায়রুল আলমের মাধ্যমে তাদের সন্ধান পান পরিবারের সদস্যরা।”
আরো ২৪ জন বাংলাদেশি
এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে তিনি জানান।
তারা কীভাবে ভারতে
এসেছেন জানা যায়নি উল্লেখ করে জোবায়েদ বলেন, বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাফেরা করার সময় পুলিশ
তাদের আটক করে। পরবর্তীতে মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় আদালতের নির্দেশে তাদের হাসপাতালে
ভর্তি করা হয়।
“এর মধ্যে দুইজনকে
হাসপাতাল ছাড়পত্র দেওয়ায় সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে।”
দীর্ঘদিন পর নিজ দেশে
ফিরে স্বজনদের কাছে পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন শায়েস্তারা ও সমীর। দুজনেই মানবাধিকারকর্মী
খায়রুল ও দুই দেশের সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
শায়েস্তারা বেগমের
ভাই জয়নাল আবেদীন বলেন, তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন। প্রায় ১৩ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
একটি হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হন তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান মিলেনি।
দুই বছর আগে মানবাধিকারকর্মী
খায়রুল আলমের মাধ্যমে তার খোঁজ পান বলে তিনি
জানান।
দীর্ঘদিন পর বোনকে
পেয়ে আপ্লুত জয়নাল দুই দেশের সরকার ও মানবাধিকারকর্মীকে ধন্যবাদ জানান জয়নাল।
সমীর কুমার মজুমদারের
ছোটো ভাই অমীর মজুমদার বলেন, ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন সমীর। তিনি
মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন। দেড় বছর আগে জানতে পারেন তার ভাই আগরতলার হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন আছেন।
ভাইকে ফিরে পেয়ে অনেক
আনন্দিত বলে জানান তিনি।
মানবাধিকারকর্মী সৈয়দ
খায়রুল আলম বলেন, “আমি আমার নিজ এলাকার (নড়াইল) একটি মেয়েকে খুঁজতে আগরতলার মডার্ন
সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে যাই। সেখানে গিয়ে তাদের খোঁজ পাই। পরবর্তীতে তাদের ঠিকানা জোগাড় করর স্বজনদের সাথে
যোগাযোগ করি।”
দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে
দুই দেশের হাই কমিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।