পাশাপাশি
এ ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইব্রাহিম
খলিল নামের এক আইনজীবীকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের ঘটনায় রোববার সুপ্রিম কোর্টে
আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন আইনজীবীরা।
সে
সমাবেশে যোগ দিয়ে মতিন খসরু বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের বাউন্ডারিতে এসে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনী একজন আইনজীবীকে ধরে নিয়ে তার উপর নির্যাতন চালাবে, তা বরদাশত করা যেতে পারে
না।
“এর
বিচার হতেই হবে। আমরা অপেক্ষা করছি ইব্রাহীম খলিলের বের হয়ে আসার জন্য। তার কথা
শুনে অবশ্যই ফৌজদারী মামলা করব। আমরা এটা ছাড়ব না। আইনজীবীর গায়ে হাত দিয়ে কেউ পার
পেয়ে যেতে পারে না।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ও পুলিশ প্রধানকে উদ্দেশ করে মতিন খসরু বলেন, “আমি আইজি সাহেব ও হোম মিনিস্টারকে
অনুরোধ করতে চাই, প্লিজ আইডেন্টিফাই দেম। তাদের সাসপেন্ড করে বিচারের ব্যবস্থা
করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তো দুর্বৃত্ত হতে পারে না।”
আইনজীবী
খলিলের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া যেত বলে মন্তব্য
করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি।
“আইনজীবীরা
আইনের ঊর্ধ্বে না। যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিচার
হবে। যদি সে অপরাধ করে থাকে, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনজীবী সমিতিকে
জানাতে পারত। মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে জানাতে পারত। বাড়ি থেকেও তাকে গ্রেপ্তার করা
যেত। তাকে কোর্ট আঙিনা থেকে গ্রেপ্তার করাটা সমীচীন হয়নি। এটা ধৃষ্টতা, এটা ক্ষমার
অযোগ্য অপরাধ।”
আইনজীবী
সুরক্ষা আইন করার প্রস্তাব সরকারকে দেওয়া হবে বলে জানান সাবেক আইনমন্ত্রী মতিন
খসরু।
বিক্ষুব্ধ
আইনজীবীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, “আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ভালভাবে চিনি। আজকে
আমি উনার সাথে কথা বলব। একজন সদস্যের জন্য সমগ্র বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে
না।”
অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল
র্যাব
সদস্যদের মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে শুক্রবার র্যাব-১০ এর
উপ-পরিদর্শক এনায়েত হোসেন বাদী হয়ে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন।
সেই
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে ইব্রাহিম
খলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার
পর শুক্রবারই তাকে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে
ইব্রাহিম খলিলকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করা হয়।
এসময়
কয়েকজন আইনজীবী ইব্রাহিম খলিলের পক্ষে তার জামিন আবেদন করেন। আদালত রোববার জামিন
আবেদনটি শুনানির জন্য রেখে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
ওই
আদালত প্রাঙ্গণে থাকা অবস্থায় সহকর্মী আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন ইব্রাহিম খলিল।
তখন অনেকেই জানতে চান কারা তাকে গ্রেপ্তার করেছে এবং নির্যাতন করা হয়েছে কি না?
কথা
বলার সময় অনেকেই এর ভিডিও ধারণ করেন, যা শুক্রবারই ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
সে
ভিডিওতে ইব্রাহিম খলিল অভিযোগ করেছেন, গত বুধবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে র্যাব
সদস্যরা তাকে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে নির্যাতন করে।
তৃতীয়
কারও ইন্ধনে এই নির্যাতন চালানো হয়েছিল বলে মনে করেন ইব্রাহিম।
এই
ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
বিবৃতিতে
ইব্রাহিম খলিলের মুক্তি ও তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান
জানানো হয়।
ওই
বিবৃতিতে সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, “ইব্রাহিম খলিলকে অজ্ঞাত স্থানে
আটকে রেখে নির্যাতনের পরে মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে
করাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। যে অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তা হাস্যকর।”
রুহুল
কুদ্দস কাজল বিডিনিউজর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইব্রাহিম খলিল আজকে জামিন পাওয়ার
পর মুক্ত হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছেন।”