ক্যাটাগরি

প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয়ে একমত রেজাউল-দোভাষ

রোববার দুপুরে নগরীর
টাইগার পাসে অস্থায়ী নগর ভবনে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন
সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ।

সভায় মেয়র রেজাউল করিম
চৌধুরী বলেন, “সিটি কর্পোরেশন ও সিডিএ দুই প্রতিষ্ঠানের কাজের সমন্বয় অতীব জরুরি।
চট্টগ্রাম নগরীতে দালিলিকভাবে ৫৭টি খাল ছিল। সিডিএর উদ্যোগে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের
মাধ্যমে ৩৬টি খালের পুনরুদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে।

“প্রকল্প বাস্তবায়নে
যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত তারা চাইলে সিটি করপোরেশন তাদেরকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করবে।
করপোরেশনের জনবল ও সরঞ্জাম রয়েছে, যা সিডিএর নাই। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক
সক্ষমতা ততটুকু নেই।”

মেয়র রেজাউল বলেন,
“সিডিএ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে খাল-নালায় যে বাঁধ দিতে হয়েছে ওই সব স্থানে বিকল্পভাবে
দ্রুত পানি চলাচলের ব্যবস্থা বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই করতে হবে। তা না হলে আবারও
জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে।

“নগরবাসীর দুর্ভোগের
কথা চিন্তা করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন জরুরিভিত্তিতে নালা-নর্দমা-খাল পরিষ্কার
পরিচ্ছন্ন কাজ শুরু করেছে। কিন্তু অপরদিকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকেও একই কাজ করতে
হচ্ছে। এতে অর্থ অপচয়ের পাশাপাশি দেখা দিচ্ছে ওভারল্যাপিং। এখানেও সিটি কর্পোরেশনের
সঙ্গে সিডিএর সমন্বয় অপরিহার্য।”

‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা
নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ নামে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সিডিএ।

২০১৭ সালের ৯ অগাস্ট
একনেকে অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের ৫ লাখ ২৮ হাজার ঘনমিটার মাটি খনন
এবং ৪ লাখ ২০ হাজার ঘনমিটার কাদা অপসারণ করা হবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য সড়কের পাশে
নালা তৈরি করা হবে এক হাজার ৭৭ কিলোমিটার। প্রায় ১০৮ একর জমি অধিগ্রহণ ও রিটেনিং ওয়াল
নির্মাণ করা হবে এক লাখ ৭৬ হাজার মিটার। ৮৫ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হবে।

এছাড়াও ছয়টি পিসি গার্ডার
ব্রিজ প্রতিস্থাপন, পাঁচটি টাইডাল রেগুলেটর স্থাপন, ৪২টি সিল্ট ট্র্যাপ স্থাপন, বন্যার
পানি সংরক্ষণ জলাধার স্থাপন তিনটি, বিদ্যমান নালার সংস্কার ও মেরামত, দুই হাজার বৈদ্যুতিক
পোল স্থানান্তর এবং ৮৮০টি স্ট্রিট লাইন স্থাপন হবে।

সিডিএর আগের চেয়ারম্যান
আবদুচ ছালামের সঙ্গে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের মধ্যে এই প্রকল্প নিয়ে দূরত্বের
সৃষ্টি হয়েছিল।

সিডিএ’র এই প্রকল্পে
‘অসঙ্গতি’ দেখার কথাও জানিয়েছিলেন নাছির। পরে অবশ্য সিডিএকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস
দিয়েছিলেন সেসময়ের মেয়র আ জ ম নাছির।

রোববারের সভায় মেয়রের
বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সিডিএ চেয়্যারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, “সিটি কর্পোরেশন
এবং চট্ট্রগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ উভয় প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই। নগরীর
৩৬টি খাল পুনরুদ্ধারে সিডিএ কাজ করছে। এর মধ্যে ২২টি পয়েন্ট চিহ্নিত করে প্রকল্প কাজ
চলমান রয়েছে।

“আগামী জুন মাসের আগে
সিডিএ খালগুলোর পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজনৈতিক,
সামাজিক এবং পেশাজীবীদের সর্ম্পৃক্ততাও প্রয়োজন।”

উভয় প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীদের
নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটি গঠনের উপর জোর দেন সিডিএ চেয়ারম্যান। পাশাপাশি আগামীতে দুই
সংস্থার সব কাজ সমন্বয়ের মাধ্যমে করতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন ডলফিন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন
সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট
কর্নেল সোহেল আহাম্মেদ, ভারপ্রাপ্ত সচিব ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল
ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম
মানিক, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন সামস, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট
কর্নেল মোহাম্মদ শাহ আলী, সিসিসির নগর পরিকল্পনাবিদ আব্দুলাহ আল ওমর, স্টেট অফিসার
কামরুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

আরও খবর-


সিডিএর প্রকল্পে ‘অসঙ্গতি’ দেখছেন নাছির
 

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প
 

চট্টগ্রামের খাল উদ্ধারে টাস্কফোর্স, প্রধান হবেন মেয়র
 

জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ-সিসিসি ‘সমঝোতা’
 

সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নে একমত সুজন-ডলফিন