রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড
সিরিজে বাংলাদেশ লেজেন্ডসের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার লেজেন্ডসের জয় ১০ উইকেটে।
এই নিয়ে টুর্নামেন্টে ৫
ম্যাচ খেলে সবকটি হারল বাংলাদেশ লেজেন্ডস। আসর থেকে তাদের একমাত্র প্রাপ্তি
অস্ট্রেলিয়া না আসায় ‘ওয়াকওভার’
থেকে পাওয়া চারটি পয়েন্ট।
ভারতের রায়পুরে সোমবার
বাংলাদেশ ২০ ওভারে তোলে ৯ উইকেটে ১৬০ রান। রান তাড়ায় অ্যান্ড্রু পাটিক ও মর্নে ফন
উইকের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতে যায় কোনো উইকেট না হারিয়েই।
দুজনের ১৬১ রানের
উদ্বোধনী জুটিতে ম্যাচ শেষ হয় ৪ বল বাকি থাকতে। শেষ ওভারে গড়ালেও প্রোটিয়াদের রান
তাড়া ছিল একদমই নিয়ন্ত্রিত।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে
কেবল একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা পাটিক অপরাজিত থাকেন ৫৪ বলে ৮২ রান করে।
কিপার-ব্যাটসম্যান ফন উইক ৬২ বলে করেন অপরাজিত ৬৯।
পাটিক ও ফন উইকের এই
জুটি টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় জুটির রেকর্ড।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে
বাংলাদেশের শুরুটা যথারীতি ছিল আশা জাগানিয়া। প্রথম ওভারে গার্নেট ক্রুগারকে
বাউন্ডারিতে শুরু করেন নাজিমউদ্দিন। পরের ওভারের প্রথম বলে মাখায়া এনটিনির বলে
ছক্কা মারেন মেহরাব হোসেন। এনটিনিকে পরে টানা দুই বলে চার-ছক্কা মারেন
নাজিমউদ্দিন।
অ্যান্ড্রু পাটিক ও মর্নে ফন উইক উদ্বোধনী জুটিতেই শেষ করে দেন ম্যাচ। ছবি : টুইটার।
সম্ভাবনাময় উদ্বোধনী
জুটি ভাঙে জন্টি রোডসের অবিশ্বাস্য ফিল্ডিংয়ে। পয়েন্টে বল ঠেলে রানের জন্য
ছুটছিলেন মেহরাব। ৫১ বছর বয়সেও দারুণ ক্ষীপ্রতায় ছুটে গুলির বেগের সরাসরি থ্রোয়ে
বোলিং প্রান্তের স্টাম্পে বল লাগান রোডস।
নাজিমউদ্দিন আগের
ম্যাচগুলির মতোই খেলেন চোখধাঁধানো কয়েকটি শট। ৫ চার ও ১ ছক্কায় তার ৩২ রানের ইনিংস
শেষ হয় অফ স্পিনার থান্ডি শাবালালার বলে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে।
ভালো শুরুটাকে আরও
এগিয়ে নিয়ে দলকে বড় স্কোরের আশা দেখায় আফতাব আহমেদ ও হান্নান সরকারের জুটি। আফতাব
বিনোদন উপহার দেন দুর্দান্ত ৩টি ছক্কায়। ৪১ বলে দুজনে গড়েন ৬১ রানের জুটি।
আফতাবের ২৪ বলে ৩৯
রানের ইনিংস থামে জেন্ডার ডি ব্রুইনের বল আকাশে তুলে। আলভিরো পিটারসেন নেন চমৎকার
ক্যাচ। হান্নান আউট হন ৩১ বলে ৩৬ করে।
এরপর রান যা একটু বাড়ান
কেবল খালেদ মাসুদ। ৯ বলে ১৯ করে এই কিপার-ব্যাটসম্যান হন রান আউট। বাংলাদেশের শেষ
৬ ব্যাটসম্যানের কেউ ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক।
১৬০ রানের পুঁজি তবু
খারাপ ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের বোলিং-ফিল্ডিংয়ে ছিল না জয়ের তাড়না।
বোলিংয়ের শুরুটা দুই
প্রান্ত থেকে ছিল দুই রকম। এক পাশে আব্দুর রাজ্জাক দারুণ নিয়ন্ত্রিত বল করে আটকে
রাখেন রান। আরেক পাশ থেকে রান আসতে থাকে দেদার।
রাজ্জাকের প্রথম ২ ওভার
থেকে আসে কেবল ৫ রান, রাজিন
সালেহর ২ ওভার থেকে ২৬!
উইকেট নিতে না পারলেও
পরে রানের গতিতে কিছুটা বাধ দিতে পেরেছিলেন মোহাম্মদ রফিক, আফতাব আহমেদরা। ৮ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান
ছিল ৫২।
তবে জুটি ভাঙতে না
পারলে তো আর রান আটকে রাখা যায় না বেশিক্ষণ! পাটিক ও ফন উইক ক্রমেই ম্যাচ থেকে
ছিটকে দেন বাংলাদেশকে। যখনই বোলাররা একটু চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন, বাজে ফিল্ডিংয়ে আলগা হয়ে গেছে তা। সব মিলিয়ে একটি
জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করার আশা শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের।
দক্ষিণ আফ্রিকা
সেমি-ফাইনালে খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আরেক সেমি-ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে খেলবে
ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের লড়াইয়ে জয়ী দল।
সংক্ষিপ্ত
স্কোর:
বাংলাদেশ
লেজেন্ডস: ২০
ওভারে ১৬০/৯ (নাজিমউদ্দিন ৩২, মেহরাব হোসেন ৯, আফতাব আহমেদ ৩৯, হান্নান সরকার ৩৬, খালেদ মাসুদ ১৯, মোহাম্মদ রফিক ৭, আব্দুর রাজ্জাক ০, মুশফিকুর রহমান ২, রাজিন সালেহ ৬, খালেদ মাহমুদ ১*, আলমগীর কবির ২*; গার্নেট ক্রুগার ৪-০-২৭-১, মাখায়া এনটিনি ৩-০-২৬-২, মন্ডে জন্ডেকি ২-০-১১-১,
আলভিরো পিটারসেন ৪-০-৩৪-০, থান্ডি শাবালালা
৪-০-৩৩-২, জেন্ডার বি ব্রুইন ৩-০-২৮-১)।
দক্ষিণ
আফ্রিকা লেজেন্ডস: ১৯.২
ওভারে ১৬১/০ (অ্যান্ড্রু পাটিক ৮২*,
মর্নে ফন উইক ৬৯*; আব্দুর রাজ্জাক ৪-০-২২-০,
রাজিন সালেহ ৩-০-৩৯-০, মোহাম্মদ রফিক ৪-০-২৯-০,
আফতাব আহমেদ ৪-০-২৪-০, আলমগীর কবির ১-০-১৫-০,
খালেদ মাহমুদ ৩.২-০-২৯-০)।
ফল: দক্ষিণ
আফ্রিকা লেজেন্ডস ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যান
অব দা ম্যাচ: অ্যান্ড্রু
পাটিক।