আর দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক লাফে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৭৭৩ জন, যা তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
এর আগে গতবছরের ১৫ ডিসেম্বর এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর। সেদিন মোট ১ হাজার ৮৭৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
আর এক দিনে এরচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর এসেছিল এ বছরের ৭ জানুয়ারি; সেদিন
মোট ৩১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সংক্রমণ বাড়তে থাকায় পরীক্ষার তুলনায় দৈনিক শনাক্তের হারও ২৭ ডিসেম্বরের
পর প্রথমবারের মত ৯ শতাংশ পেরিয়ে গেছে। গত একদিনে পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৯ দশমিক
৪৮ শতাংশ ছিল বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
সোমবার সকাল পর্যন্ত আরও ১ হাজার ৭৭৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে করোনাভাইরাসে
আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫৯ হাজার ১৬৮ জন হয়েছে।
আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ২৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যু বেড়ে
৮ হাজার ৫৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও এক হাজার
৪৩২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত
সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ১৩ হাজার ১২৭ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর
পর গত ৭ মার্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই
৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য
নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মার্চ তা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে
গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক
থেকে ৩৩ তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি
২১৯টি ল্যাবে ১৮ হাজার ৬৯৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪২
লাখ ৮৩ হাজার ২৪৬টি নমুনা।
এ পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩২
লাখ ৭৪ হাজার ২৩টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১০ লাখ ৯ হাজার ২২৩টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ৯ দশমিক
৪৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার
হার ৯১ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন,
তাদের মধ্যে ২১ জন পুরুষ আর নারী ৫ জন। তাদের প্রত্যেকেই হাসপাতালে মারা গেছেন।
২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে মারা যাওয়া ২৬ জনের মধ্যে
১৯ জনেরই বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২ জনের
বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ২৩ জন ঢাকা বিভাগের, ১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের,
১ জন রাজশাহী বিভাগের এবং ১ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৫৭১ জনের মধ্যে ৬ হাজার
৪৮৪ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ৮৭ জন নারী।
তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৭৮২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া
২ হাজার ১১৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৬৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে,
৪২৬ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৫ জনের
বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম ছিল।
তাদের ৪ হাজার ৮১২ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৫৮০ জন চট্টগ্রাম
বিভাগের, ৪৮৪ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৬৩ জন খুলনা বিভাগের, ২৬০ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১১
জন সিলেট বিভাগের, ৩৬৪ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৯৭ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।