সম্প্রতি ভারতের জ্যেষ্ঠ এক সরকারি কর্মকর্তা এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে জানিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্য অনুসারে, প্রস্তাবিত আইনের বিলটি হবে ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রশ্নে বিশ্বের অন্যতম কঠোর নীতি। একাধারে ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পদের সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বাণিজ্য এবং হস্তান্তর নিষিদ্ধ হবে আইনটির মধ্য দিয়ে।
জানুযারি মাসেই ভারত সরকার বিটকয়েনের মতো ব্যক্তিগত ভার্চুয়াল কারেন্সি নিষিদ্ধ করে সরকারি ডিজিটাল কারেন্সি আনার পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার খবর জানিয়েছিল। বর্তমান পদক্ষেপটি ওই পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রেখেই নেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিলটি ক্রিপ্টোকারেন্সি সংগ্রাহকদের ছয় মাস সময় দেবে। ওই সময়ের মধ্যে হাতে থাকা ডিজিটাল কারেন্সি প্রচলিত মুদ্রায় নেওয়ার কাজ সম্পন্ন করতে হবে তাদের।
বিলটি সহজেই আইনে পরিণত হবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা। কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারই পার্লামেন্টে আধিপত্য বিস্তারী অবস্থানে রয়েছে। বিল আইনে পরিণত হলে গোটা বিশ্বে ভারতই হবে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যাপারে এতোটা কঠোর অবস্থান নেওয়া প্রথম দেশ।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীন ক্রিপ্টোকারেন্সি সংগ্রহ ও বাণিজ্য নিষিদ্ধ করলেও এর সংরক্ষণের জন্য কোনো শাস্তির বিধান রাখেনি।
ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
এ ধরনের সম্পদ সংরক্ষণের শাস্তি হিসেবে কী শুধু জরিমানার বিধান থাকবে না কি কারাদণ্ডও ভোগ করতে হতে পারে, সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি। এ ব্যাপারে এখনই মুখ খুলতে নারাজ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা শুধু জানিয়েছেন, আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
শীর্ষ ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তারা এরই মধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ‘পনজি স্কিম’ আখ্যা দিয়েছেন। অন্যদিকে দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এ মাসে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “আমি শুধু আপনাদের এতোটুকু বলতে পারি যে আমরা আমাদের চিন্তাকে সীমিত করছি না, আমরা এমন রাস্তা খুঁজছি যাতে ডিজিটাল বিশ্ব ও ক্রিপ্টোকারেন্সিতে পরীক্ষা চালানো সম্ভব হয়। অত্যন্ত হিসেব করেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ভারতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার খড়গ মাথার উপর থাকা স্বত্ত্বেও ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন বাড়ছে। শিল্প অনুমান বলছে, বর্তমানে দেশটির ৮০ লাখ বিনিয়োগকারীর দশ হাজার কোটি রুপিরও বেশি ক্রিপ্টো বিনিয়োগ রয়েছে। তবে, এ ব্যাপারে সরকারি কোনো ডেটা নেই।