মামলার যাবতীয় নথি নিয়ে আগামী ১৫ এপ্রিল
তাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া এ মামলার আসামি আবুল কালাম আবুকে কেন
জামিন দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
আবুর জামিন আবেদনের ওপর শুনানির সময় বিচারপতি
এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার
রুলসহ এ আদেশ দেয়।
আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো.
খুরশীদ আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
আইন কর্মকর্তা বাপ্পী পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার পর এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে।
এখনও প্রতিবেদন দিতে পারেনি। এর মধ্যে একজন আসামিকে পিবিআই গ্রেপ্তার করেছে।
“ওই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।
সেখানে সে বলেছে, নুরুল ইসলামকে সে নিজে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। এর জন্য আসামি পটল তাকে
৫ হাজার টাকা দেয়। অপরাপর আসামিরা নুরুল ইসলামকে যে হত্যা করেছে, সেটা সে দেখেনি। কিন্তু
আসামিদের হাতে, গায়ে রক্ত লেগে থাকতে দেখেছে বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে।
“তাছাড়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে
নিহতের শরীরে নির্যাতনের ১১টি চিহ্ন আছে। তারপরও এরকম একটি চাঞ্চল্যকর মামলার প্রতিবেদন
দিতে পারছে না কেন, তা জানতেই পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তাকে ১৫ এপ্রিল মামলার সিডিসহ
উপস্থিত হতে বলেছে আদালত।”
গত বছর ১৪ ডিসেম্বর আবুল কালাম আবুকে গ্রেপ্তার
করে পুলিশ। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি বিচারিক আদালত তার জামিন আবেদন খারিজ করলে হাই কোর্টে
জামিন চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
২০১৯ সালের ১১ জুন সকালে পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া
এলাকার ‘এসএস ব্রিক ফিল্ড’ নামের একটি ইটভাটা থেকে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার
করা হয়।
ওই ঘটনায় নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানা
থানায় এজাহার দাখিল করলেও পুলিশ তার এজাহার না নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে রাখে
বলে তিনি অভিযোগ করেন।
থানার কোনো তৎপরতা না দেখে নুরুল ইসলামের
স্ত্রী সাজেদা বেগম পুঠিয়া উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশী মামলা করেন। এই মামলার
শুনানির সময় পুঠিয়া থানা নিগার সুলতানার সই করা একটি এজাহার আদালতে দাখিল করে, যাতে
অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি দেখানো হয়।
তখনই নিগার সুলতানা ও তার মা সাজেদা বেগম
আপত্তি জানিয়ে বলেন, এই এজাহার তাদের নয়।
পরে নুরুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে ২০১৯
সালের ১৮ জুলাই আইজি, রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি ও রাজশাহীর এসপির কাছে ‘এজাহার
বদলে ফেলার’ অভিযোগ দেওয়া হয়। তারপরও পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে হাই কোর্টে রিট আবেদন
করেন নিগার সুলতানা।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট রুল জারি
করার পাপাশি বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেয়। হাই কোর্টের নির্দেশে অভিযোগ তদন্ত করে পুঠিয়া
থানার ওসি সাকিলসহ ৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন রাজশাহীর মুখ্য
মহানগর হাকিম মো. মেহেদী হাসান তালুকদার।
ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ২০১৯ সালের
১ ডিসেম্বর রায় দেয় হাই কোর্ট। সে রায়ে নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্তভার পিবিআইকে
দেওয়া হয়। পরে পুঠিয়ার সাবেক ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।