সোমবার সকালে গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “গতকাল ডিএমপির যিনি ভারপ্রাপ্ত কমিশনারের দায়িত্বে আছেন তার নির্দেশনা আমাদেরকে বিস্মিত করেছে। কারণ সরকারি প্রোগ্রামের সাথে আমাদের প্রোগ্রামের কোনো বিরোধ নেই। তারা তাদের প্রোগ্রাম করবে, আমরা আমাদের প্রোগ্রাম করব।”
“এই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে আমাদের রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের এই সুবর্ণজয়ন্তী পালনের অনুষ্ঠানে যেন বাধা সৃষ্টি করা না হয় সেই অনুরোধ আমরা জানাচ্ছি।”
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানের ১০ দিন রাজধানীতে রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি না রাখতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
ঢাকা নগরে নানা উন্নয়ন প্রকল্প চলার মধ্যে ওই দুটি অনুষ্ঠানের কারণে ট্রাফিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে বলে জনদুর্ভোগ এড়াতে এই আহ্বান বলে রোববার জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত কমিশনার) মনিরুল ইসলাম।
মুজিবর্ষ ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় নানা কর্মসূচি থাকবে। যাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েকজন রাষ্ট্রনেতার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, “তিনি (মনিরুল ইসলাম) বলেছেন, অ্যান্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রামস। এটা কেন বলেছেন, কিভাবে বলেছেন, সেটার একটা ব্যাখ্যা আমরা জানতে চাই। আমরা বুঝতে পারছি না, স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদপযান করা বা পালন করা কি অ্যান্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম? তারা ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না- এটা কোন ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে আসছে আমরা বুঝতে পারছি না।”
১৭ থেকে ২৬ মার্চ রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এটা তো অবশ্যই সরকারি প্রোগ্রাম হবে। বিদেশ থেকে রাষ্ট্রীয় মেহমানরা আসবেন। আমরা যথাসম্ভব নিঃসন্দেহে সেটাকে সহযোগিতা করব।
“এটা আমাদের জাতির সন্মানের প্রশ্ন, এটা আমাদের মর্যাদার প্রশ্ন, আমরা অবশ্যই সেটাকে সেইভাবে দেখব। কিন্তু হঠাৎ করে ডিএমপি থেকে এই ধরনের নির্দেশনা আমি মনে করি যে, আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের যে উদ্দেশ্য, সেটাকে ব্যাহত করবে। একই সঙ্গে স্বাধীনতার বিষয়টাকে প্রশ্নবিদ্ধি করছে কিনা এটাও আমাদেরকে লক্ষ্য করে দেখতে হবে।”
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে স্বরচিত কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটির উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্ব ও সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনটি হয়।
এতে স্বরচিত কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটির কর্মসূচি তুলে ধরেন কমিটির সদস্য সচিব আবদুল হাই শিকদার।
১৬ থেকে ৩০ মে উপজেলা ও থানা, ১ জুলাই থেকে ৩১ সেপ্টেম্বর জেলা, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভাগীয় পর্যায়ে এবং ২০২২ সালের ২৬ মার্চ জাতীয়ভাবে সমাপনী কর্মসূচি করবে এই কমিটি।
শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, স্বরচিত কবিতা ও ছড়া, আবৃত্তি, শিশু-কিশোর, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপস্থিত বক্তৃতা এবং কুইজ প্রতিযোগিতা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান সারোয়ার, নজরুল ইসলাম মনজু, ফরিদা ইয়াসমীন, রিয়াজ উদ্দিন নসু, আরিফুর রহমান মোল্লা, শায়রুল কবির খান, শাহজাহান সম্রাট, রিটা আলী, মনিরুজ্জামান মনির, এনামুল হক জুয়েল, মিজানুর রহমান, রফিক লিটন প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।