সারা দেশে ছড়িয়ে
ছিটিয়ে থাকা অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের ভিটায় দুই বেড, দুই টয়লেট, ডাইনিং
ও কিচেনসহ ৬৩৫ বর্গফুটের এই ‘বীর নিবাস’ তৈরি করে দেওয়া হবে।
এ জন্য প্রায় ৪
হাজার ১২৩ কোটি টাকায় ‘অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প
নেওয়া হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশের ৬৪ জেলার ডিসি কার্যালয় ও
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
চূড়ান্ত অনুমোদনের
জন্য মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন
করা হবে বলে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. মামুন-আল-রশীদ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “এ প্রকল্পটি
২০১৯ সালে প্রত্যাহারকৃত ‘প্রতি জেলা-উপজেলায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন
নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের স্থলাভিষিক্ত হিসাবে বাস্তবায়ন করা হবে।”
তিনি বলেন, প্রতি
জেলা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করতে ২০১৮ সালের ৮ মার্চ একনেকে
একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের আওতায় দুই হাজার ২৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে
সারাদেশে ৫৩২টি ভবনে মোট ৮ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের কথা ছিল।
পরে মুক্তিযোদ্ধাদের
চাহিদা অনুযায়ী বাস্তবতার ভিত্তিতে কাজটি করতে ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই প্রস্তাব
প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
বাস্তবতা বোঝার
জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সে সময় অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলে। তারা
বলেন, নিজেদের ভিটা ও পরিবার ছেড়ে তারা ওইসব ফ্ল্যাটে উঠতে চান না। এ কারণেই তখন প্রকল্পটি
প্রত্যাহার করা হয়।
এবার সেই প্রকল্পের
বিকল্প নতুন প্রকল্প হিসেবে এ প্রকল্পটি গ্রহণ
করা হচ্ছে বলে জানান মামুন-আল-রশীদ।
পরিকল্পনা কমিশনের
এই সদস্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সারা দেশের অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য
বাচাই করে। তাতে দেখা যায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা অনেক বেশি। শেষ পর্যন্ত ৩০ হাজার
হিসেবে ধরা হয়।
এরপর মুক্তিযুদ্ধ
বিষয়ক মন্ত্রণালয় ডিপিপি পুনর্গঠন করে মোট প্রায় ৪ হাজার ১২৩ কোটি টাকার এই প্রকল্প
প্রস্তাব তৈরি করে, যা ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে খসড়ায়।
মামুন-আল-রশীদ বলেন,
এবার প্রকল্পটির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের নিজস্ব ভিটায় দুটি বেডরুম. দুটি টয়লেট, একটি
কিচেন, একটি ড্রয়িং রুমের একতলা ভবন ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ঘর তৈরিতে
ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৮ টাকা।
প্রকল্পটি অনুমোদন
পেলে এ বছরের জুন থেকে কাজ শুরু করে ২০২৩ সালের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে চাবি তুলে
দেওয়াল লক্ষ্য রয়েছে বলে জানান তিনি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী
এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘অসচ্ছল বীর
মুক্তিযোদ্ধা-বিরাঙ্গনা-শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রী
ও সন্তানদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি ও আর্থ সামাজিক অবস্থান উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর
গ্রহীত পদক্ষেপ ও উপহার হিসেবে’ এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।