আবার ওই বিশেষ মানুষটার কাছে তা পছন্দের
হলেও অন্যদের চোখে তা আজগুবি কাজও হতে পারে।
এই ভুল বোঝাবুঝির ব্যাপারটা নারী ও পুরুষ
দুইয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। পুরুষদের ব্যাপারটিতে মেনে নিতে সমস্যা না হলেও নারীদের
জন্য হয়ত তা অবিশ্বাস্য হতে পারে।
সম্পর্কবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত
প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হল নারীদের এমন কিছু আচরণ সম্পর্কে যা নারীরা মনে করেন পুরুষের
কাছে আকর্ষণীয়, তবে আসলে ব্যাপারটা হয় উল্টো।
অতিরিক্ত রূপ সচেতন: পুরুষের কাছে বাহ্যিক সৌন্দর্য গুরুত্বপূর্ণ, তাতে সন্দেহ নেই। তবে সেটাই
সবকিছু নয়। তাই নারী হিসেবে শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যই আপনার গুরুত্বের কেন্দ্রবিন্দু
হওয়া উচিত নয়।
পুরুষ আকর্ষণ করার একমাত্র হাতিয়ার যদি
শুধুই সৌন্দর্য হয়, তবে একসময় তা পুরুষের জন্য একঘেয়ে হয়ে যাবে, হতে পারে বিরক্তিকরও।
অপরদিকে যে নারী শুধুই রূপ সর্বস্ব, তার
আত্মবিশ্বাসও ধুলিসাৎ হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, রূপের বাইরেও আরও গুরুত্বপূর্ণ গুণ
থাকতে হয়।
ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকা: পুরুষের আকর্ষণ অর্জন করার পদ্ধতি যদি তার হাতে ধরা না দেওয়ার
চেষ্টা হয়, তবে যে পুরুষ তাতে আকৃষ্ট হবে সে ওই নারীর জীবনের জন্যই ক্ষতিকর হবে।
এমন কিছু পুরুষ পিছু নেবে যারা নিজেদের
অসংখ্য চাহিদা পূরণ আর দৃষ্টি আকর্ষণ করাই যেন তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। আপাতদৃষ্টি
‘এমন পুরুষই তো চাই’, মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে তা সুখকর হবে না।
কারণ এই পুরুষ একবার মন পেয়ে গেলে, তার
স্বার্থ হাসিল হয়ে গেলে পরে ছুঁড়ে ফেলবে সেই নারীকে।
তাই নারী হিসেবে নিজেকে আবদ্ধ না রেখে
পুরুষদের আপনার সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ দিন। আলাপ করলেই নিজের মন তাকে বোঝাতে পারবেন,
তার মনের খবর বুঝতে পারবেন।
অনেক পুরুষ আপনার প্রতি আগ্রহী এমনটা বোঝোনো: প্রতিযোগিতা পুরুষকে বাড়তি পরিশ্রমে
আগ্রহী করে তোলে। একজন পুরুষ যদি জানতে পারে তার পছন্দের নারীর মন পাওয়া জন্য অন্যরাও
সচেষ্ট তবে সেই পুরুষ তখন সচেষ্ট হয়ে ওঠে।
তবে সমস্যা হলো অনেক নারী, পুরুষের এই
আচরণের সুযোগ নিতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলেন।
কোনো পুরুষকে যদি বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে,
সেই নারীর জন্য আরও অনেকেই ঘুরছে তবে একপর্যায়ে তার আত্মসম্মানে আঘাত আসবে। নিজের আত্মসম্মান
বাঁচাতে নিজেই প্রতিযোগিতা থেকে সরে যাবে।
আর যে সরবে না সে হয়ত চায় প্রতিযোগিতায়
বিজয়ী হতে। ফলে একবার পেয়ে গেলেই তার উদ্দেশ্য সফল হয়ে গেল, তখন সেই নারীকে আর প্রয়োজন
নেই।
সাহায্য চাই সবসময়: নারী হিসেবে আপনি হয়ত ভাবছেন প্রতিটি পুরুষ চায় কর্তা হতে, তার সঙ্গীর সামনে
ঢাল হয়ে থাকতে। ফলে আপনি নিজেকে অসহায় হিসেবে তুলে ধরেন। তবে সেটারও একটা সীমা আছে।
প্রতিনিয়ত যদি কোনো না কোনো বিষয়ে সাহায্য
দরকার হয়, সবক্ষেত্রেই যদি অসহায় ভাব দেখানো হয়, তবে একসময় সেই নারী সঙ্গী হিসেবে নয়
বরং পুরুষের বোঝায় পরিণত হবেন।
ফলে দ্রুত সেই পুরুষ আগ্রহ হারাবে।
প্রতিটি মানুষের জীবনেই তার নিজস্ব সমস্যা
আছে। আর কেউ চাইবেনা প্রতিনিয়ত আরেকজনের হাজারও সমস্যার দায়ভার নিতে।
পুরুষ অবশ্যই নারীর প্রতি সহানুভূতিশীল,
যত্নবান। তবে নারীর অসহায়ত্ব যদি পুরুষের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা হয় আর এই আদুরে ভাব সবসময়ই
পুরুষের কাছে আকর্ষণীয় হবে, তবে তা ভুল।
যদি কোনো ব্যাপারে সাহায্য প্রয়োজন হয়,
সরাসরি পরিস্থিতি খুলে বলুন একজন পরিণত মানুষ হিসেবে।
তার পছন্দকে নিজের পছন্দ বানানো: প্রতিটি মানুষ চায় কেউ একজন তার নিজস্বতার জন্য ভালোবাসুক। আসলেই
ভালোবেসে থাকলে ভালো মন্দ দুটোকেই ভালোবাসবে।
এটা নারী ও পুরুষ দুয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
আবার ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে নিজের
আগ্রহের বিষয়গুলো মিলে যাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
তার মানে এই নয় যে ভালোবাসার মানুষটির
যা কিছু পছন্দ তা নিজেরও পছন্দ হতে হবে।
তার সকল পছন্দদের কাজগুলোতে অংশ নিয়ে
যদি সবসময়ই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া চেষ্টা করেন তবে বড় ধরনের ভুল হবে। তার পছন্দের
কাজগুলোতে অংশ নিন, দেখুন নিজেরও তাতে আগ্রহ জাগে কি-না।
যদি আগ্রহ পান খুবই ভালো, যদি না পান
তবে জোর করে ভালোলাগার অভিনয় করা ঠিক না। কারণ এমন করলে একসময় নিজস্বতা হারাবে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন