১০ মার্চ ঢাকায় এসে ১১ মার্চ থেকে পাবনা সদরের একটি রিসোর্টে তিনি এ চলচ্চিত্রের দৃশ্যধারণে অংশ নিলেও তথ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দর্শনা বণিককে এখনও ‘ওয়ার্ক পারমিট’ দেওয়া হয়নি।
দেশীয় চলচ্চিত্রে বিদেশি অভিনয়শিল্পীদের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২০ (সংশোধিত) অনুযায়ী দেশের বাইরের কোনও শিল্পী দেশের চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে ‘ওয়ার্ক পারমিট’ নেওয়ার বিধি রয়েছে।
সপ্তাহখানেক আগে কলকাতার এ নায়িকার শুটিংয়ের অনুমতি চেয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) প্রস্তাব পাঠিয়েছে তরঙ্গ এন্টারটেইনমেন্ট।
পাঁচ দিন আগে সুপারিশসহ প্রস্তাবটি তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন।
তবে এফডিসি থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাবটি এখনও অনুমোদন পায়নি বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (চলচ্চিত্র-১) মো. সাইফুল ইসলাম; ফলে দর্শনা বণিকের শুটিংয়ের অনুমতি নেই।
অনুমোদন পাওয়ার আগেই দর্শনার শুটিংয়ের বিষয়টি অবহিত করা হলে সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তাদের ‘নলেজে’ নেই।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার আগে বিদেশি শিল্পীর শুটিংয়ের কোনও বিধান নেই বলে জানান এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
বিষয়টি নিয়ে তিনদিন ধরে ছবির প্রযোজক সোহানী হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার সকালে পাবনা থেকে দর্শনা বণিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তিনি শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার আগে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে ১০ মার্চ ঢাকায় এসেছেন।
তথ্য মন্ত্রণালয় বলছে, অনুমোদন দেওয়া হয়নি; তাহলে ওয়ার্ক পারমিট কোথায় পেয়েছেন?-এমন প্রশ্নের জবাবে দর্শনা বলেন, “বাংলাদেশের ফিল্মের টিম থেকে বিষয়টি করা হয়েছে। আমি ঠিক বলতে পারব না। ছবির পরিচালক সুমন (ওয়াজেদ আলী সুমন) ভালো বলতে পারবেন; ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।”
পরিচালক ওয়াজেদ আলী সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে দাবি করেছেন সোমবার ‘ওয়ার্ক পারমিট’ হাতে পেয়েছেন তারা।
মঙ্গলবারও তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনুমোদন দেওয়া হয়নি-বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সুমন বলেন, “গতকাল এসেছে কিনা আমি জানি না। আমি এই বিষয়টি দেখছি না। এখানে যারা ম্যানেজমেন্টে আছে তারাই বিষয়টি দেখছে।তারা বলছে, পেয়েছে।”
কলকাতার নায়িকা দর্শনা বণিক পাবনায় পাবনায় ছয়দিন ধরে শুটিং করছেন; তিনি আরও ১০ দিন শুটিংয়ে পাবনায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন। ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন চিত্রনায়ক শাকিব খান।
ছবি: ইউটিউব থেকে।
ছবিটি নিয়ে চলচ্চিত্রের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিদেশি শিল্পী হলে অবশ্যই তার ওয়ার্ক পারমিট লাগবে। ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কারো কাজ করার সুযোগ নেই। তারা যদি ওয়ার্ক পারমিট না নিয়ে করে তাহলে তো অবশ্যই কাজ করার সুযোগ নাই।”
এর আগে ২০১৭ সালেও পরিচালক ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘মনে রেখো’ নামে একটি ছবির শুটিংয়ে ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া অংশ নিয়েছিলেন কলকাতার বনি সেনগুপ্ত; গাজীপুরে এক শুটিং স্পটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় সুমন ও বনি শুটিং ছেড়ে পালিয়েছিলেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে এসেছে।
একই বছরের অগাস্টে ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া একটি টিভি নাটকের শুটিংয়ে অংশ নেওয়ায় কলকাতার অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন টিভিকেন্দ্রিক ১৩টি সংগঠনের জোট ‘এফটিপিও’-এর সদস্য সচিব গাজী রাকায়েত। পরে সেই শুটিং স্থগিত করা হয়েছিল।
২০১৮ সালের দিকে রাজধানীর উত্তরায় পরিচালক অনন্য মামুনের পরিচালনায় ‘ফোন এক্স’ নামে একটি ওয়েব সিরিজের শুটিং চলাকালে বিদেশী শিল্পীদের ‘ওয়ার্ক পারমিট’ না থাকায় শুটিং স্থগিত করা হয়েছিল।