বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১৮ মার্চ এবারের বইমেলার পর্দা উঠছে। ঢাকা মহানগর
পুলিশ বলছে, মেলায় দোকানদার-দর্শনার্থী সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার
কৃষ্ণপদ রায় মঙ্গলবার সকালে নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখতে মেলা প্রাঙ্গণে যান। পরে অস্থায়ী
পুলিশ ক্যাম্পে সাংবাদিকদের সামনে তিনি কথা বলেন।
কৃষ্ণপদ বলেন, “আমরা একটি
ভিন্ন সময়ে বইমেলা শুরু করছি। প্রতিবছর আমাদের যে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ
করা হয়, এবার তার সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”
তিনি জানান, বেইমেলার প্রতিটি
প্রবেশ পথে আর্চওয়ে থাকবে, বের হওয়ার জন্য
থাকবে আলাদা পথ।
ভিড় এড়াতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক ও বাংলা একাডেমির বিপরীত পাশ দিয়ে আরও দুটি
করে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ থাকবে এবার।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন,
“আপনারা জানেন, রাস্তাঘাটে উন্নয়ন মূলক কাজ চলছে, এজন্য অতিরিক্ত গেইট রাখা হয়েছে।
এবার কিছু কিছু নিরাপত্তার কাঠামো পরিবর্তন করা হয়েছে। আমাদের মোবাইল পেট্রোল থাকবে,
ফুট পেট্রোল থাকবে।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে উৎসর্গ করা হচ্ছে বইমেলার
এবারের আয়োজন।
বইমেলার সামগ্রিক সৌন্দর্য,
বিন্যাস ও প্রকাশনায় থাকবে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আবহ। মেলার কারুকাজ
ও আলোকচিত্রে থাকবে স্বাধীনতার চেতনার প্রকাশ।
স্বাধীনতার পাঁচটি দশককে
পাঁচটি আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হবে মেলায়; যাতে বইমেলায় এসে দর্শনার্থীরা স্বাধীনতার
সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুভূতিও উপলব্ধি করতে পারেন। এছাড়া স্বাধীনতা স্তম্ভের চারদিকে বর্ণমালা
দিয়ে নির্মাণ করা হবে হরফ স্থাপনা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে একুশে বইমেলার প্রস্তুতি। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ
জানান, গাড়ি রাখার জন্য এবার বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী
উদ্যানের মাঝের রাস্তা পথচারীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
“যারাই মেলায় আসবেন, তারা
অবশ্যই মাস্ক পরে আসবেন। হাত ধোয়া কিংবা স্যানিটাইজ করার জন্য গেইটে ব্যবস্থা থাকবে।”
ভাইরাসের বাইরে অন্য কোনো
হুমকি এবার দেখছেন কি না- সেই প্রশ্নে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “বিষয়টা আমাদের মাথায়
রয়েছে। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। মানুষের অনুভূতিতে
আঘাত দেয় এমন বই প্রকাশ হচ্ছে কিনা আমরা খোঁজ রাখছি। কেউ অপরাধমূলক কাজ করছে কিনা সে
ব্যাপারেও আমরা নজরদারি করছি। যথা সময়ে তথ্য পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
বইমেলা ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা
ব্যবস্থা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ পোশাকে পুলিশ সদস্যরা থাকবেন, আর্চওয়েতে
তল্লাশি করা হবে, সিসিটিভিতে হবে নজরদারি। এছাড়া গোয়েন্দারাও মাঠে থাকবেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা
বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাজ্জাদুর রহমান বলেন, এ বছর বইমেলার নিরাপত্তায় ৩২০টি
সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
মহামারীর কারণে মেলার পরিসরও
এবার বাড়ানো হয়েছে। ফলে এবার প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুটের বিশাল বিস্তৃতি পাচ্ছে বইমেলা;
যা গতবারের প্রায় দ্বিগুণ।