আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৮ রানে জিতেছে আফগানিস্তান। ১৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জিম্বাবুয়ে থামে ১৫০ রানে।
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল আফগানিস্তান।
আফগানদের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন গুরবাজ। ব্যাটিং উইকেটে ৪৫ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন এই ওপেনার। অধিনায়ক আসগর করেন ৩৮ বলে ৫৫ রান।
এরপর প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের মারমুখী হওয়ার সুযোগ দেননি করিম জানাত। দুর্দান্ত বোলিংয়ে তিনি কেবল ১৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। ২৮ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন রশিদ খান।
টস হেরে বুধবার ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তানকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন গুরবাজ ও জানাত। উদ্বোধনী জুটিতে ৫২ বলে ৮০ রান তোলেন দুই জন।
ইনিংসের পঞ্চম বলে সিকান্দার রাজাকে চার মেরে শুরু হয় গুরবাজের তাণ্ডব। পরের ওভারে রিচার্ড এনগারাভাকে টানা দুই ছক্কায় ওড়ান তিনি। ডোনাল্ড টিরিপানোকে জোড়া চার মারার পর শন উইলিয়ামসের ওভারে মারেন আরও তিনটি। ২৬ বলে তুলে নেন ফিফটি।
জিম্বাবুয়েকে প্রথম সাফল্য এনে দেন এনগারাভা। ২২ বলে তিন চারে ২৬ রান করা জানাতকে কট বিহাইন্ড করে ফেরান বাঁহাতি এই পেসার।
দল উইকেট হারালেও গুরবাজ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং চালিয়ে যান। দারুণ ব্যাটিংয়ে তাকে সঙ্গ দেন অধিনায়ক আসগর। তিনিও দ্রুত বাড়াতে থাকেন রান।
রাজাকে এক ছক্কা ও টিরিপানোকে দুই ছক্কা মারেন গুরবাজ। ব্র্যান্ডন মাভুতাকে একটি মারার পর রায়ান বার্লকে ওড়ান আরও দুইবার।
সেঞ্চুরি কাছেই ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি ছুঁতে। বার্লের পরের ওভারে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় ধরা পড়েন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। থামে ৪৫ বলে ৬ চার ও ৭ ছক্কায় তার ৮৭ রানের ইনিংস। ভাঙে ৭৪ রানের জুটি।
মোহাম্মদ নবি বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তবে এক প্রান্তে জিম্বাবুয়ের বোলারদের শাসন করতে থাকেন আসগর। শেষ ওভারে ব্লেসিং মুজরাবানিকে ছক্কায় উড়িয়ে ৩৭ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। পরের বলে আবারও ছক্কা মারতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারিতে। ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৩৮ বলে করেন ৫৫।
লক্ষ্য তাড়ায় জিম্বাবুয়ের শুরুটা খুব খারাপ হয়নি। কিন্তু তা ধরে রাখতে পারেনি তারা। দলটির হয়ে ৩০ পার করেন কেবল টিনাশে কামুনহুকামউই।
পঞ্চম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ফরিদ আহমাদের বলে পুল করে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন ১৮ রান করা টারিসাই মুসাকান্দা।
এরপর কামুনহুকামউই ও শন উইলিয়ামস দ্রুত রান তুলে কমাতে থাকেন ব্যবধান। দুই জনের ব্যাটে ১০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ে পায় ৮২ রান।
নবির অফ স্পিনে পরপর দুই বলে চার ও ছক্কা মারেন উইলিয়ামস। কিন্তু পরের ওভারেই তাকে ফিরিয়ে দেন জানাত। ২০ বলে এক ছক্কা ও ২ চারে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক করেন ২২ রান।
ফিফটির দিকে এগোচ্ছিলেন কামুনহুকামউই। রশিদের গুগলিতে বোল্ড হয়ে তাকে থামতে হয় ৪৪ রানে। ৩৭ বলের ইনিংস মারেন ৪টি চার।
বার্লকে বোল্ড করে দেন জানাত। মারমুখী ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করা সিকান্দার রাজাকে ইনিংস বড় করতে দেননি ফরিদ। ১৪ বলে ৩ চারে ২২ রান করে এই অলরাউন্ডার ক্যাচ দেন বাউন্ডারিতে।
এক বলের ব্যবধানে রিচমন্ড মুতুমবামি ও ওয়েসলি মাধেভেরেকে ফিরিয়ে দেন রশিদ। সেভাবে কখনোই জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে না পারা দলটি শেষ দুই ওভারে শুধু হারের ব্যবধানই কমায়।
আগামী শুক্রবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৯৮/৫ (গুরবাজ ৮৭, জানাত ২৬, আসগর ৫৫, নবি ৭, রশিদ ৭, জাদরান ০*, গনি ০*; রাজা ২-০-১৬-০, এনগারাভা ৪-০-৪৩-২, মুজারাবানি ৪-০-৩৮-২, টিরিপানো ৪-০-৪৬-০, উইলিয়ামস ১-০-১৪-০, মাভুতা ২-০-১৩-০, বার্ল ৩-০-২৪-১)।
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৫০/৭ (কামুনহুকামউই ৪৪, মুসাকান্দা ১৮, উইলিয়ামস ২২, রাজা ২২, বার্ল ২, মুতুমবামি ১৫, মাধেভেরে ২, টিরিপানো ৬*, মাভুতা ১০*; নাভিন ৩-০-২৭-০, হামজা ৩-০-১৯-০, ফরিদ ৪-০-৩১-২, নবি ২-০-২৪-০, জানাত ৪-০-১৪-২, রশিদ ৪-০-২৮-৩)।
ফল: আফগানিস্তান ৪৮ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে আফগানিস্তান।
ম্যান অব দা ম্যাচ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ।