তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন বাংলাদেশকে স্বতন্ত্র একটি পরিচয় দান করেছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম তিনি অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে দশ দিনের আয়োজনের সূচনায় বুধবার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং জনগণের কঠোর পরিশ্রম দেশকে দ্রুত উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।”
বাংলাদেশের এই উদযাপনে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে বুধবার সকালে বাংলাদেশে পৌঁছান মোহাম্মদ সলিহ। ফার্স্ট লেডি ফাজনা আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্মানিত অতিথি ইব্রাহিম সলিহ বলেন, “এই মহতী আয়োজনে আমন্ত্রিত হয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। শেখ মুজিবুর রহমান প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। তার জীবন বাংলাদেশকে স্বতন্ত্র একটি পরিচয় দান করেছে।
“সারাজীবন তিনি গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তার ছয় দফা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। তার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ কার্যত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা। তার এই ভাষণ ইউনেস্কোর ডকুমেন্ট হেরিটেজের অংশ হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়েছে।”
করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে বাংলাদেশ যে সাহায্য মালদ্বীপকে করেছে, সে কথা তুলে ধরে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সলিহ বলেন, “মহামারীর মধ্যে সারা বিশ্ব একটি বিশেষ অবস্থার মধ্যে যাচ্ছে। মালদ্বীপ বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্বের জন্য কৃতজ্ঞ। এই বন্ধুত্ব মহামারী সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করছে।
“আমরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই খাদ্য, পিপিই এবং স্বাস্থ্য সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করার জন্য। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার বিমান বাহিনীর একটি হেলথ কেয়ার প্রফেশনাল টিম পাঠিয়েছিল। মালদ্বীপ আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। এই সহযোগিতা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি নিদর্শন।”
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দ্বীপ দেশ মালদ্বীপকে যে সঙ্কট মোকাবেলা করতে হচ্ছে, সে কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন তিনি।
ইব্রাহিম সলিহ বলেন, “দুই দেশের সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। মানবসম্পদ উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা পরস্পরের ওপর নির্ভর করি। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সঙ্কট দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি মোকাবলোয় আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে চাই।
“আমি নিশ্চিত, দুই দেশের বিদ্যামান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। মালদ্বীপ সবসময় বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। মালদ্বীপে বিদেশি শ্রমিক পাঠানো দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অন্যতম। আমার দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ।”
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমার সরকার বিদেশি শ্রমিকদের সব ধরনের অধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। মালদ্বীপের সকল বিদেশি শ্রমিককে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ এর টিকা দেওয়ার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে নাগরিক ও অনাগরিক কারও মধ্যে কোনো বৈষম্য করা হবে না।”
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মালদ্বীপ সফরেরও আমন্ত্রণ জানান ইব্রাহিম সলিহ।