ক্যাটাগরি

আগ্রাবাদে সংঘর্ষ: রিকশা যেতে বাধা, কথা কাটাকাটি থেকে খুনোখুনি

ওই ঘটনায় আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ খুনের এই কারণ জানিয়েছে।

বুধবার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) ভবনের সামনে রাস্তায় স্থানীয় রঙ্গী পাড়ার একদল যুবক সাউন্ড বক্স বাজিয়ে মোটর সাইকেল ও বাই সাইকেল নিয়ে স্ট্যান্ড শো (মোটর সাইকেল ও বাইসাইকেল নিয়ে কসরত) করছিল।

ওই সময় সেই পথে মোটর সাইকেল ও রিকশাআরোহী স্থানীয় তিন যুবকের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তা দু’পক্ষের সংঘর্ষে রূপ নিলে মো. হাশেম খান নামের একজন নিহত এবং দু’জন গুরুতর আহত হন।

নিহত হাশেম  সাউন্ড সিস্টেমের কাজ করতেন। আহতরা হলেন- ফাহিম  ও রবিউল। তাদের বয়স ২০-২২ বছর।

সংঘর্ষের পর পুলিশ উভয় পক্ষের ২৪ জনকে আটক করেছে বলে জানান ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আটকদের মধ্যে হাশেমের ওপর হামলাকারী যুবকও আছে। যার নাম সোহাগ (২২)। সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হামলার কথা স্বীকার করেছে।

“মূলত সোহাগের বড় ভাই মহসীন ও অপু নামে তার এক বন্ধুর সঙ্গে স্ট্যান্ড শো আয়োজকদের একজনের কথা কাটাকাটি হয়। এসময় মহসীনকে মারধর করে আয়োজকরা। বিষয়টি দেখে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে, আর বড় ভাইকে মারধরের কথা শুনে সোহাগ ছুটে এসে পাশ্ববর্তী একটি টং দোকান থেকে কনডেন্স মিল্কের কৌটা কাটার জন্য রাখা ছুরি নিয়ে হামলা চালায়।

এতে তিনজন আহত হয়। যাদের মধ্যে হাশেমকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান বলে জানান ওসি।

পরে ময়না তদন্তের জন্য হাশেমের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। আহত দু’জন একই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ওসি মহসিন বলেন, “সোহাগ জানিয়েছে, বড় ভাইকে মারধর করতে দেখে সে পাশ্ববর্তী টং দোকান থেকে ছুরি নিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। এতে শুরুতে দু’জনের ছুরির আঘাত লাগে। আরেকজনের পেটে ছুরিটি আটকে যাওয়ার পর সে পালিয়ে যায়।”

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) এএএম হুমায়ুন কবির বলেন, “মহসীন ও তার বন্ধু অপু বাজার করে রিকশা নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। এসময় আয়োজকদের মধ্যে সুমন নামের একজন তাদের ওই রাস্তা দিয়ে যেতে বাধা দেয়।

নিহত হাশেমের স্বজনদের আহাজারি

নিহত হাশেমের স্বজনদের আহাজারি

“এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মহসীনকে মারধর করা হয়। মহসীন স্থানীয় হওয়ায় তা দেখে কয়েকজন এগিয়ে আসে। আর তার ছোট ভাই সোহাগ এসে ছুরিকাঘাত করে।”

ওসি মহসিন বলেন, স্ট্যান্ড শো আয়োজকরা ‘আগ্রাবাদ ইস্টার্ন বয়েজ ক্লাব’ এর সদস্য। তাদের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে বাই সাইকেল ও মোটর সাইকেল নিয়ে স্ট্যান্ড শো করে। বুধবার হালিশহর এলাকায় তাদের ক্লাবের অন্য কিছু সদস্য ‘উদয়ন একতা সংঘ’ নামের আরেকটি ক্লাবের উদ্বোধন করে।

সবাই একই ধরনের টি শার্ট পড়ে সেখানে গিয়েছিল। তারা সংখ্যায় শ’ খানেক ছিল বলে জানান ওসি।

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে রুমেল চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি জানান, তিনি সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করেন। রঙ্গী পাড়ায় শোভাযাত্রার জন্য সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া নিয়েছিল। তারা পিকআপে সাউন্ড সিস্টেমের সঙ্গে হাশেমকে রেখেছিল তা পরিচালনার জন্য।

“মারামারির মধ্যে সবাই পালিয়ে গেলেও হাশেম সাউন্ড বক্স নিয়ে গাড়িতে ছিল। তখন তার ওপর হামলা করা হয়।”

নিহত হাশেমের স্ত্রী জরিনা বেগম জানিয়েছেন, তার স্বামী আকবর শাহ থানার মালিপাড়া এলাকায় টিভি মেকানিকের কাজ করেন। পাশাপাশি সাউন্ড সিস্টেম পরিচালনার কাজও করেন।

তার মালিক সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া দেওয়ায় তা নিয়ে সকালে কাজে গিয়েছিলেন হাশেম। দুপুর দুইটায় কাজ শেষে হাশেমের বাসায় ফেরার কথা ছিল বলে জানান তিনি।