বুধবার টোকিওতে জাপানি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ প্রতিক্রিয়া দেখান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এশিয়া সফরে তার সঙ্গে আসা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লয়েড অস্টিন চীন ও উত্তর কোরিয়ার কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা উদ্বেগ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মৈত্রী আরও শক্তিশালী করারও আহ্বান জানিয়েছেন।
টোকিওতে গোলটেবিল বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাইওয়ান নিয়ে চীনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে তাদের কর্মকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, বেইজিং উত্তেজনা না কমিয়ে তা বাড়িয়েই চলেছে।
দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগর নিয়ে জাপান এবং এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে চীনের বিরোধ আছে।
এশিয়ায় মিত্রদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চলতি সপ্তাহে ব্লিংকেন ও অস্টিন জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সফরে বের হন।
এটাই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রথম বিদেশ সফর।
ব্লিংকেন বলেন, বেইজিং নিজের দেশের ভেতর দমনমূলক এবং বিদেশে আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, এর মধ্যে সেনকাকুসসহ পূর্ব চীন সাগর যেমন রয়েছে তেমনি দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ানও আছে।
সেনকাকুস দ্বীপপুঞ্জ চীনের কাছে দিয়াওউ নামে পরিচিত; পূর্ব চীন সাগরের এই দ্বীপপুঞ্জ জাপানের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও চীন এর মালিকানা দাবি করে আসছে।
“তাইওয়ান ও তাইওয়ান উপকূলকে ঘিরে যা ঘটছে তাতে জাপানের স্বার্থ আছে, আমরা এ বিষয়ের আলোচনায় কিছু সময় কাটিয়েছি,” জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দুই মন্ত্রীর যৌথ বৈঠকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন ব্লিংকেন।
তার এই মন্তব্যকে দুই দেশের ৪ মন্ত্রীর ‘২+২’ বৈঠকের পর দেওয়া বিবৃতির প্রতিধ্বনি হিসেবে উল্লেখ করেছে রয়টার্স। কয়েকদিন পর আলাস্কায় ব্লিংকেনের সঙ্গে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখোমুখি বৈঠক হওয়ারও কথা রয়েছে।
“কিছু কিছু বিষয়ে চীনের পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের যে উদ্বেগ তা চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরার সুযোগের দিকে তাকিয়ে আছি আমরা,” বলেছেন ব্লিংকেন।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে পৌঁছানোর পর মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন চীন ও উত্তর কোরিয়ার সৃষ্ট নিরাপত্তা উদ্বেগ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মিত্রতার গুরুত্বের উপর জোর দেন।
“চীন ও উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে নজিরবিহীন হুমকির কারণে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার মিত্রতা এখন আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে,” দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সুহ উকের সঙ্গে আলোচনার শুরুতে অস্টিন এসব বলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ।
অস্টিন যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার মৈত্রীকে উত্তরপূর্ব এশিয়ার শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি এবং অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ও এর বাইরের জন্য ‘অপরিহার্য’ বলে অভিহিত করেন।
সুহ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে দুই মিত্র দেশের যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে জোর দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ইয়োনহাপ।
এবারের সফরে ব্লিংকেন ও অস্টিনের দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে একত্রে ‘২+২’ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন ও দেশটির উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা।