ক্যাটাগরি

কোভিড-১৯: ৩ মাস পর একদিনে ৩৫ হাজারের বেশি নতুন রোগী ভারতে

এ রোগীদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশেরই সন্ধান মিলেছে দেশটির সবচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্রে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে ২৪ ঘণ্টায় ২৩ হাজার ১৭৯ নতুন কোভিড-১৯ রোগী পাওয়া গেছে বলে বৃহস্পতিবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আনন্দবাজার। 

ভারতে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবেই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৬০৫; এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৫৯ হাজার ২১৬ জনের।

শনাক্ত রোগী সংখ্যায় দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটির অবস্থান বিশ্বের মধ্যে তৃতীয়। ভারতের উপরে কেবল যুক্তরাষ্ট্র আর ব্রাজিলই আছে।

৩৫ হাজারের বেশি নতুন রোগীর পাশাপাশি সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস ভারতে ১৭২ জনের প্রাণও কেড়ে নিয়েছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে ৮৪ জনের। 

ভারতে মহামারীর প্রথম ঢেউয়ের মধ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা যখন চূড়ায় উঠেছিল, তখন প্রতিদিনই এক লাখের কাছাকাছি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

গত মাসের শুরুর দিকে রোগীর এ সংখ্যা নেমে আসে দিনপ্রতি ৯ হাজারের আশপাশে।

ফেব্রুয়ারিতে মহারাষ্ট্রজুড়ে বেশিরভাগ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালুর অনুমতি দেওয়া হলে রাজ্যটিতে ফের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে।

প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষকে পরিবহন করা মুম্বাইয়ের ট্রেনগুলোও এখন চালু আছে।

সংক্রমণ বাড়তে দেখে সম্প্রতি ১১ কোটি ২০ লাখ বাসিন্দার পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটি কয়েকটি জেলায় লকডাউন দিয়েছে; সিনেমা হল, হোটেল ও রেস্তোঁরার উপর চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়েছে।

রাজ্যটির বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলীয় শহর পুনে, ঔরঙ্গবাদ, নাসিক ও নাগপুরে দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় এখন দ্বিগুণ রোগী শনাক্ত হচ্ছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

“শিল্প কারখানাগুলোকে আমরা যত কম সংখ্যক মানুষকে নিয়ে পারা যায় কাজ করতে বলেছি। বেশিরভাগ তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে,” বলেছেন রাজ্যের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে দায়িত্বপ্রাপ্ত না হওয়ায় নাম প্রকাশে রাজি হননি তিনি।

রোগীর চাপে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটির বেশ কয়েকটি শহর বিশেষ করে মুম্বাই, নাগপুর ও পুনের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কোভিড-১৯ সেবাদান কেন্দ্রের শয্যা দ্রুত পূরণ হয়ে যাচ্ছে।  

অথচ চলতি মাসের শুরুতেও মহারাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোর ৮০ শতাংশ নিবিড় পরিচর্যা শয্যা খালিই ছিল।

মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি পাঞ্জাব, মধ্য প্রদেশসহ আরও কয়েকটি রাজ্য মার্চে করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন বিস্তৃতি দেখছে। বিভিন্ন উপলক্ষে ভিড় এবং মাস্ক পরতে অনীহাকেই এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।

বুধবার মোদী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে লাগাম টানতে যত দ্রুত সম্ভব শনাক্তকরণ পরীক্ষা ও টিকাদানের আওতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে মুখ্যমন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সংক্রমণের দ্বিতীয়বার চূড়ায় ওঠা আটকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, বলেছেন তিনি।