আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে
৪৫ রানে জিতেছে আফগানিস্তান। ১৯৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জিম্বাবুয়ে থামে ১৪৮ রানে।
তিন ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তান এগিয়ে ২-০ তে।
এই জয়ে অধিনায়ক হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে
বেশি ম্যাচ জয়ের রেকর্ডে মহেন্দ্র সিং ধোনির পাশে বসলেন আসগর। দুই জনই এই সংস্করণে
অধিনায়ক হিসেবে জিতেছেন ৪১ ম্যাচ।
আফগানিস্তানকে বড় পুঁজি এনে দিতে পাঁচ নম্বরে নেমে ঝড়
তোলেন নবি। খেলেন ১৫ বলে ৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। পরে ৩ ওভারে ২০ রান দিয়ে ২ উইকেট
নিয়ে তিনিই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
দুইশ রানের কাছাকাছি সংগ্রহ গড়ায় বড় অবদান আছে করিম জানাতের।
প্রথম ফিফটি পাওয়া এই অলরাউন্ডার ৩৮ বলে খেলেন ৫৩ রানের ইনিংস। উসমান গনি ৩৪ বলে করেন
৪৯।
টস জিতে শুক্রবার ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় আফগানিস্তান।
গত ম্যাচে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালানো রহমানউল্লাহ গুরবাজ ফিরে যান দ্রুত। রিচার্ড এনগারাভার
বলে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
তাতে অবশ্য দমে যাননি জানাত ও গনি। দলের রান বাড়াতে থাকেন
দুইজন। সিকান্দার রাজার ওভারে একটি করে ছক্কা-চার মারেন জানাত। পরে ব্লেসিং মুজারাবানির
ওভারে দুটি করে ছক্কা-চারে তুলে নেন ২০ রান। পাওয়ার প্লেতে আফগানিস্তান পায় ৪৯ রান।
শুরুতে কিছুটা মন্থর ব্যাটিং করা গনিও পরে খেলতে থাকেন
শট। ব্র্যান্ডন মাভুতাকে ছক্কায় ওড়ানোর পর শন উইলিয়ামসকে মারেন চার। ডনাল্ড টিরিপানোকে
পরপর দুই বলে মারেন ছক্কা ও চার। পরে ওই ওভারে আরেকটি বাউন্ডারি মেরে ধরা পড়েন শর্ট
ফাইন লেগে।
গনির ৪৯ রানের ইনিংসটি গড়া ৫ চার ও ২ ছক্কায়। তার বিদায়ে
ভাঙে ৬৭ বলে ১০২ রানের জুটি।
৩১ বলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ফিফটি স্পর্শ
করেন জানাত। রায়ান বার্লকে সুইপ করে বোল্ড হওয়ার আগে চার ছক্কা ও তিন চারে করেন ৩৮
বলে ৫৩ রান।
এরপই শুরু নবির তাণ্ডব। মাভুতার এক ওভারেই মারেন তিন
ছক্কা। পরে এনগারাভাকে মারেন দুই বাউন্ডারি। মুজারাবানিকে ছক্কায় উড়িয়ে পরের বলে ফেরেন
ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে। ১৫ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ৪০ রান।
শেষ ওভারে ১৮ রান নিয়ে দলকে দুইশ রানের কাছে নিয়ে যান
রশিদ খান ও আসগর।
রান তাড়ায় জিম্বাবুয়ের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। প্রথম
বলেই তারা হারায় তিনাশে কামুনহুকামউইয়ের উইকেট। তাকে এলবিডব্লিউ করা নাভিন-উল-হক পরের
ওভারে এসে বিদায় করেন ওয়েসলি মাধেভেরেকে।
ব্যাটিংয়ে নেমেই পরপর দুই বলে চার মারেন উইলিয়ামস। কিন্তু
বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক।
নবিকে সুইপ করে বোল্ড হন তিনি। টারিসাই মুসাকান্দাকে বড় ইনিংস খেলার আগেই থামিয়ে দেন
আমির হামজা। রাজাও পারেননি দলকে এগিয়ে নিতে।
৫৬ রানে ৫ উইকেটে হারানো জিম্বাবুয়ের হাল ধরেন রিচমন্ড
মুতুমবামি ও বার্ল। মুতুমবামিকে এলবিডব্লিউ করে তাদের ৬২ রানের জুটি ভাঙেন নবি।
বার্লও পরে টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ২৯ বলে ৩ ছক্কা ও
এক চারে ৪০ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে থামান রশিদ। ওই ওভারে মাভুতা ও টিরিপানোকে
ফিরিয়ে দেন আফগান লেগ স্পিনার। ৩০ রানে তার শিকার এই তিনটিই।
মুজারাবানিকে বোল্ড করে দলের জয় নিশ্চিত করেন জানাত।
৭ রান তুলতেই শেষ ৪ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে শনিবার মুখোমুখি হবে
দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৯৩/৫ (গুরবাজ ৯, গনি ৪৯, জানাত ৫৩, জাদরান ১২, নবি ৪০, আসগর ১৪*, রশিদ
৯*; রাজা ৩-০-২৬-০, এনগারাভা ৪-০-৩১-১, মুজারাবানি ৪-০-৪৪-২, মাভুতা ৩-০-৪২-০, টিরিপানো
২-০-৩০-১, উইলিয়ামস ২-০-১৩-০, বার্ল ২-০-৭-১)।
জিম্বাবুয়ে: ১৭.১ ওভারে ১৪৮ (কামুনহুকামউই ০, মুসাকান্দা ২২, উইলিয়ামস ৯, মাধেভেরে ৭, রাজা
১৫, মুতুমবামি ২১, বার্ল ৪০, টিরিপানো ২৪, মাভুতা ০, মুজারাবানি ০, এনগারাভা ০*; নাভিন
৩-০-২৮-২, নবি ৩-০-২০-২, হামজা ২-০-১৭-১, ফরিদ ৩-০-২১-১, জানাত ৩.১-০-২৭-১, রশিদ ৩-০-৩০-৩)।
ফল: আফগানিস্তান ৪৫
রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে আফগানিস্তান।
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ নবি।