শুক্রবার
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর তৃতীয় দিনের আয়োজনে এক ভিডিও
বার্তায় তিনি বলেন, “অসাধারণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করছে রাশিয়া,
যিনি একজন লড়াকু নেতা হিসেবে জনগণের স্বাধীনতা ও সুখের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন
এবং রাশিয়ার সত্যিকারের বন্ধু ছিলেন।”
দশ
দিনের এ আয়োজনের তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানে দেওয়া ভিডিওবার্তায় মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে
বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের নানা দিকও তুলে ধরেন লাভরভ।
১৯৭২
সালের মার্চে বঙ্গবন্ধুর রাশিয়া সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন
বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়ার দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে সেই সফরে যান বাংলাদেশের
তখনকার সরকারপ্রধান শেখ মুজিব।
”সেই
সময়ই সমতা, পারস্পরিক সম্মান ও স্বার্থ বিবেচনার নীতির উপর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের
ভিত্তি নির্মাণ হয়েছিল।”
স্নায়ুযুদ্ধের
মধ্যে ১৯৭১ সালে দুই মেরুর বিশ্বে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা ছিল
রাশিয়ার, যা স্মরণ করে লাভলভকে পরিচয় করিয়ে দেন শুক্রবারের অনুষ্ঠানের সঞ্চালক।
নিজ
দেশের ঐতিহাসিক সেই ভূমিকার কথা স্মরণ করে লাভরভ বলেন, “নিজের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার
আদায় করতে গিয়ে কঠিন মূল্য দিয়েছিল পূর্ববাংলার মানুষ। সে সময় আমাদের দেশ বাংলাদেশকে
উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সমর্থন দেয় এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভূমিকা
রাখে।”
১৯৭২
সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাইন ও বিধ্বস্ত জাহাজ
সরাতে রুশ নৌবাহিনীর কার্যক্রমের কথাও স্মরণ করেন তিনি।
স্বাধীনতার
পর থেকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে মন্তব্য করে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বলেন, “আপনাদের দেশ অগ্রগতি ও ক্রমাগত উন্নয়নের দিকে স্থিরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক
পরিমণ্ডলে মর্যাদা অর্জন করেছে।
”এর
ফলেই দারিদ্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের মত বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্রিয়ভাবে অংশ
নিচ্ছে বাংলাদেশ।”
জাতিসংঘ
শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের অবদানের কথা উল্লেখ করে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর
মাধ্যমে বৈশ্বিক সংঘাত মোকাবেলায় বাংলাদেশ ভূমিকা রাখছে।
লাভরভ
বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার বাংলাদেশ। করোনাভাইরাস
মহামারীর পরও গতবছর আমাদের লেনদেন ১৫ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গিয়েছিল।”
রূপপুরে
বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরে
তিনি বলেন, এটা দুই দেশের সবচেয়ে বড় যৌথ প্রকল্প, যা ২০২৩-২৪ সালের দিকে বিদ্যুৎ খাতে
সর্বশেষ প্রযুক্তি নিয়ে পূর্ণ উৎপাদনে যাবে।
এ
সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “দ্বিপক্ষীয়
রাজনৈতিক সংলাপ ও পরস্পরের জন্য লাভজনক সহযোগিতা চালিয়ে নিতে রাশিয়া প্রস্তুত। আমরা
আত্মবিশ্বাসী, আমাদের নাগরিকদের কল্যাণে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।”