দুই বছর আগে তাকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে বেইজিং ও ওটোয়ার মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ সৃষ্টি হয়।
স্পেভরের সঙ্গে প্রায় একই সময়ে চীন কানাডার সাবেক কূটনীতিক মাইকেল করভিগকেও গ্রেপ্তার করেছিল।
শুক্রবার সকালে চীনের ডানডংয়ে দুই ঘণ্টার মধ্যেই স্পেভরের বিচার শেষ হয়ে যায় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
চীনে এরকম দ্রুতগতিতে বিচার শেষ হওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ভ্যাঙ্কুবারে বিমান বদলানোর সময় কানাডীয় কর্তৃপক্ষের হাতে গ্রেপ্তার হন হুয়াওয়ের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা (সিএফও) মেং ওয়ানঝৌ।
তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইরান নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বহুজাতিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারিত করার অভিযোগ আছে।
হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে মেং অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বেইজিং এ গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে চীনা এ নাগরিককে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানায়; নাহলে অটোয়াকে ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেয়।
মেংকে গ্রেপ্তারের পরপরই চীন কানাডার তিন নাগরিক- সাবেক কূটনীতিক মাইকেল করভিগ, ব্যবসায়ী স্পেভর ও শিক্ষক সারাহ ম্যাকাইভারকে আটক করে। পরে শেষের জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
কানাডা পরে এসব আটকের মাধ্যমে চীন ‘জিম্মি কূটনীতি’ করছে বলে অভিযোগ করলেও বেইজিং বলেছে, স্পেভর ও করভিগকে গ্রেপ্তারের সঙ্গে হুয়াওয়ে সিএফওর গ্রেপ্তারকাণ্ডের কোনো সংযোগ নেই।
শুক্রবার স্পেভরকে ‘গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রের গোপন তথ্য বাইরে পাঠানোর’ অভিযোগে আদালতে হাজির করা হয় বলে চীনের আদালতের দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
রায়ের তারিখ পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও বলেছে তারা।
স্পেভরের বিচার চলার সময় আদালতের বাইরে চীনে কানাডার দূতাবাসের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জিম নিকেলসহ একদল বিদেশি কূটনীতিককে দেখা গেলেও তাদেরকে বিচারকক্ষে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে নিকেল আদালতে কূটনীতিকদের ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন’ বলে অভিহিত করেছেন।
বিচার শুরুর আগে স্পেভরের সঙ্গে তাদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
চীনের আদালতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য সংশ্লিষ্ট হওয়ায় শুক্রবারের বিচার সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল না।
গ্রেপ্তার আরেক কানাডীয় করভিগের বিচার আগামী সপ্তাহে হওয়ার কথা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে দুই কানাডীয়ই চীনের কারাগারে বন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
গত বছরের জুনে এ দু’জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়; দোষী সাব্যস্থ হলে তাদের লম্বা সময়ের জন্য কারাগারে থাকতে হবে।
কানাডার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও স্পেভর ও করভিগকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনে আটক দুই কানাডীয়র ‘নিরাপদে দেশে ফিরে আসা’ নিশ্চিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন।