স্বাধীনতার
৫০ বছরের অগ্রযাত্রার উপর শনিবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ
(সিজিএস) আয়োজিত সংলাপে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন ১৯৭২ সালে শাসন ক্ষমতায়
আসেন, তখন মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৪ ডলার। ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে বঙ্গবন্ধু তার সাড়ে তিন
বছরের শাসনামলে সেটি নিয়ে গেছেন ২৭৭ ডলারে।
“বঙ্গবন্ধুর
হত্যার পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ আবার শাসন ক্ষমতায় আসে। এর আগে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত মাথাপিছু
আয় ছিল ৩২৯ ডলার। বিশ বছরের মাত্র ৫৩ ডলারের অগ্রগতি। অথচ বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের
শাসনামলে অগ্রগতি হয় ১৮৩ ডলার। এই পরিসংখ্যান মাথায় রেখে আজকে আমাদের দেশের অগ্রযাত্রাকে
মূল্যায়ন করতে হবে।”
তাজুল
বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই উল্লেখযোগ্য হারে পরিবর্তন হয়েছে। প্রান্তিক অঞ্চল
থেকে শহর সর্বত্র মানুষ উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে। অবশ্য সেখানে অনেক ব্যর্থতাও আছে।
আমাদের অনেক চাহিদা ও সীমাবদ্ধতা আছে। সব চাহিদা রাতারাতি পূরণ সম্ভব নয়। আমরা এখন
গুণগত শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং উন্নত জীবনযাপনের জন্য লড়ছি।”
সংলাপে
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, “স্বৈরতন্ত্র ও সামরিক শাসনের দ্বারা
গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারকে খর্ব করা হয়েছিল। এখন দেশ সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় চলছে।
দুর্নীতি নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। তবে দুর্নীতিবাজরা আইনের আওতায় আসছে। আমরা জাতির
পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ব।”
রেলপথ
মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, “আজকে আমরা গভর্নেন্স, সাংবিধানিক অধিকারের কথা
বলছি। কিন্তু এটা খর্ব হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে। আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার নেতৃত্বে আবার আমরা সাংবিধানিক ব্যবস্থা ফিরে পেয়েছি।
“এই
ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য আন্দোলন-সংগ্রামের নামে ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে একই রকম পরিস্থিতি
তৈরি করা হয়েছিল, পঁচাত্তরের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির
জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজন হয়। এই পরিবেশটি কখনই বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হতে
দেয়নি। কখনও সামরিক লেবাসে, কখনও গণতন্ত্রের নামে একই শক্তি দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত
করেছে।”
দিনব্যাপী
সংলাপের দুই পর্বে ‘নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে পুন-অন্বেষণ’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো
নাওকি, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা উসমান তুরান, ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি
সুদীপ্ত মুখার্জি, ব্রিটিশ হাই কমিশনের বাংলাদেশ
উন্নয়ন পরিচালক জুডিথ হারবার্টসন, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবধিকার ও শাসনকার্য
বিষয়ক কার্যালয়ের পরিচালক র্যান্ডাল ওলসন, বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর উইমেন লিডারশিপের
সদস্য এবং রাষ্ট্রদূত নাসিম ফিরদৌস।
জাহাঙ্গীরনগর
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহাব এনাম খানের সঞ্চালনায় নিরাপত্তা বিষয়ক প্যানেল আলোচনায়
এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা
বিশেষজ্ঞ ড. সায়রা খান, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা
রিজওয়ানা হাসান অংশ নেন।
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ শাহানের সঞ্চালনায় গভর্নেন্স সম্পর্কিত আলোচনায়
অংশ নেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা-সচিব বদিউল আলম মজুমদার, যুক্তরাষ্ট্রের
ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রিয়াজ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
বাংলাদেশ
ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদের সঞ্চালনায়
উন্নয়নের উপর প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন অর্থনীতিবিদ ও গভর্নেন্স বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ পারভেজ
ইমদাদ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী, এনআরবিসি
ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ
তিতুমীর।
‘উন্নয়নশীল
দেশে রূপান্তর’ সংলাপে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার, ফেয়ার গ্রুপের
চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব, বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব, পিডব্লিউসি
বাংলাদেশের সিনিয়র পার্টনার মামুন রশিদ অংশ নেন।
এর
আগে উদ্বোধনী পর্বে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, বীর বিক্রম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ,
বীর প্রতীক এম হারুন-অর-রশিদ, সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের (সিজিএস) চেয়ারম্যান
মনজুর আহমেদ চৌধুরী, সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বক্তব্য দেন।