বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর চতুর্থ দিনের আয়োজনে শনিবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “১৯২০ সালের মার্চ জন্ম নেওয়া জাতির জনক বৈষম্য, অসমতা দূর করার সংগ্রামে তার সারাজীবন উৎসর্গ করেছেন। নিজের দেশকে সোনার বাংলায় রূপ দিতে তার প্রচেষ্টা অনন্তকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে প্যারেড গ্রাউন্ডের জোড়া আয়োজনকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে অভিহিত করেন ওআইসি মহাসচিব।
“এটা সত্যিই একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যে, দেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছে তখন জাতির জনকের মেয়ে এই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বৈষম্য ও অসমতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। তার পিতার সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।”
“১৯৭১ সালে দূরদর্শী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে এক স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭৪ সালে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে ওআইসিতে সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়। সেই থেকে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে সংগঠনের কাজে অংশ নিয়ে আসছে এবং অবদান রাখছে।”
ওআইসির দ্বিতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর যোগদানের কথা স্মরণ করে মহসচিব বলেন, “১৯৭৪ সালে ওআইসির দ্বিতীয় সম্মেলনে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেখানে অংশ নেন। ইসলামী বিশ্বের সঙ্গে নতুন রাষ্ট্রের যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যেই তিনি এই সম্মেলনে যোগ দেন। আজকের বাংলাদেশ হচ্ছে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তির উজ্জ্বল উদাহরণ। মুসলিম বিশ্বের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য ওআইসি ও বাংলাদেশ সব সময় দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।”
চতুর্থ দিনের আয়োজনে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন ফ্রান্সের ইন্টারপার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ ফর সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট জেকুলিন জেরোমেডি।
বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ৩০ লাখ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছিল। বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা এই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার ভয়াবহ ঘটনাগুলোরই স্মৃতিচারণ করছে। ১৯৪৭ সালের পর থেকে বাংলাদেশের জন্মের আগ পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সংঘাত হচ্ছিল। প্রয়াত এই ৩০ লাখ মানুষের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশের পতাকার সবুজ রঙকে সমৃদ্ধির প্রতীক উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার দেশে সবুজ হচ্ছে উজ্জল ভবিষ্যতের প্রতীক। তোমাদের দেশে সবুজ হচ্ছে শস্যক্ষেত ও সমৃদ্ধির প্রতীক। বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখছে।
“আজকে দেশ উন্নয়নের লক্ষ্যপূরণে যে অবস্থায় গিয়েছে, জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান সেজন্য গর্বিত হবেন। অনেক চ্যালঞ্জ থাকা সত্ত্বেও প্রতিবছর বাংলাদেশে ২০ লাখ তরুণ কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছে। নতুন নতুন পণ্য নিয়ে নতুন নতুন বাজারে প্রবেশ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে। এখন বাংলাদেশকে আরও বেশি নারী কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নজর দেওয়া উচিত।”
চতুর্থ দিনে আয়োজনে বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন লেখক ও গবেষক জাফর ইকবাল। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছোটবোন শেখ রেহানাকে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।