রোববার মেলার চতুর্থ দিন লিটলম্যাগ চত্বরের সব স্টলে প্রকাশনা প্রদর্শনী ও বিক্রি বন্ধ রেখে সেখানে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ মিছিলও করেন লিটল ম্যাগাজিনের প্রকাশক, সম্পাদক ও কর্মীরা।
লিটলম্যাগ চত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি সংলগ্ন আমতলায় না নেওয়া হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ধর্মঘট কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন তারা।
এ বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্বে পাশে রমনা কালী মন্দিরের পেছনে লিটলম্যাগ স্টলের জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের বইমেলায় লিটলম্যাগ চত্বর বাংলা একাডেমির বহেড়াতলা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম পাশের আমতলায় স্থানান্তর করা হয়।
এ বছর লিটলম্যাগ চত্বর স্থানান্তরের বিষয়ে প্রকাশ-বিক্রেতাদের না জানিয়েই মেলার নকশা করা হয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
‘দ্রষ্টব্য’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক কামরুল হুদা পথিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রকাশক বা সম্পাদক কারও সাথে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই এই বছর বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তর করে একটা বিচ্ছিন্ন জায়গায় স্থাপন করেছে। মূল মেলার দিকে পেছন দিয়ে খুপড়ি ঘরের মতো করে লিটল ম্যাগাজিন স্টলগুলো স্থাপন করা হয়েছে।
“করোনার কারণে ব্যাপক দূরত্ব রেখে অন্যান্য স্টল নির্মাণ করা হলেও লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে দুই স্টলের মাঝে এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁক রাখা হয়নি। বাংলা একাডেমি বরাবরের মতোই ছোট কাগজকে অবজ্ঞা করছে।”
তিনি বলেন, “প্রতিবছরই এই ম্যাগাজিনের স্টল বরাদ্দ নিয়ে একাডেমি কর্তৃপক্ষ নানা টালবাহানা করে। এ বছর আমাদের সাথে একটি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। আমরা এর নিন্দা জনাই এবং দ্রুত পূর্বের জায়গায় স্থানান্তরের দাবি জানাই।”
‘হালখাতা’ সম্পাদক শওকত হোসেন বলেন, “আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলা একাডেমি লিটল ম্যাগজিনকে মেলার মূল প্রাঙ্গণে জায়গা দিয়েছে। কিন্তু এ বছর এমন একটা জায়গা দিয়েছে, যেখানে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা ভুল করেও আসবে না। লিটলম্যাগ চত্বরের পাশে টয়লেট, সামনে লেখক মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। এত বড় মেলা প্রাঙ্গণে মানুষ জানবেও না এখানে লিটলম্যাগ চত্বর আছে।”
‘অনুভূতি’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক রনি অধিকারী বলেন, “এবার প্রায় ১৩৫টি ছোট কাগজ মেলায় অংশ নিয়েছে। কিন্তু আমরা কোনো ক্রেতা-দর্শনার্থী পাচ্ছি না। গত বছর মেলার প্রবেশ পথে স্টল থাকায় ভালো সাড়া পেয়েছিলাম।”
এ বষিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলা কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বলেন, “বিষয়টা নিয়ে আমরা সোমবার তাদের সঙ্গে বসব।বাংলা একাডেমির ডিজি মহোদয় তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তারা যেখানে চায়, সেখানেই দেওয়া হবে।”
বিকাল ৪টায় মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র’ শীর্ষক আলোচনা । এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী। আলোচনায় অংশ নেন কল্যাণী ঘোষ, বুলবুল মহলানবীশ এবং আশরাফুল আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন মুম রহমান, মন্দিরা এষ এবং বিধান রিবেরু।
রোববার বইমেলায় নতুন বই এসেছে ৮১টি।
সোমবারের আয়োজন
সোমবার বইমেলার পঞ্চম দিনে বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্য’ শীর্ষক আলোচনা।এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তারেক রেজা।
আলোচনায় অংশ নেবেন নাসির আহমেদ, খালেদ হোসাইন এবং মিনার মনসুর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কবি অসীম সাহা।