সোমবার বিকাল থেকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জ্বলতে থাকা এ অগ্নিকাণ্ডে দুই শিশুর মৃত্যু হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও হতাহতের সংখ্যা নিয়ে প্রশাসনের কেউ কথা বলছেন না।
তবে বালুখালী ৯ নম্বর ক্যাম্পটির এ-২ ব্লকের কমিউনিটি নেতা জামাল হোসেন লালু বলেন, ক্যাম্পে আগুন লাগার ঘটনায় তার ক্যাম্পের সবকটি বসতঘর সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। উখিয়ার বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-২ ব্লকের বাসিন্দা দুই শিশু নিহত হয়েছে।
তবে শিশুদের বিস্তারিত পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি ভাষ্য তার।
ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ, এপিবিএন এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের চেষ্টায় রাত সোয়া ৯টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান কক্সবাজারস্থ ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) অধিনায়ক এসপি আতিকুর রহমান।
আতিকুর বলেন, “আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিটের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরা ৫ ঘণ্টার বেশি চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
অগ্নিকাণ্ডে ক্যাম্পে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ার কথা বললেও এ অধিনায়ক বলছেন, হতাহতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির কোনো ধরণের তথ্য তার কাছে নেই। এ নিয়ে অন্য সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডে বেশ কয়েকজন হতাহতের খবর শোনার কথা জানিয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, অন্তত ৯ হাজার ৬০০টির বেশি বসত ঘর ও দোকানসহ নানা স্থাপনা সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে।
পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে বলে জানান পুলিশের এ ডিআইজি।
কক্সবাজারস্থ অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার সামছু-দৌজা নয়ন জানিয়েছেন, সোমবার বিকাল ৪টায় উখিয়ার বালুখালী ৮-ডব্লিউ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এ আগুন লাগে। এরপর আগুন ক্যাম্পটির লাগোয়া ৯, ১০ ও ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে।
ক্যাম্পের বসত ঘরগুলো ঝুপড়ির মতো একটির সাথে আরেকটি লাগোয়া হওয়ায় এবং সে সময় বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়ায় বলেন তিনি।
“আগুন লাগার সাথে সাথে স্বেচ্ছাসেবক কর্মীসহ স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেন।
“আগুন লাগার কারণে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
এদিকে, রাত ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামানসহ প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. শাহিন মো. আবদুর রহমান, উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. রাজন বড়ুয়া জানিয়েছেন অগ্নিকাণ্ডে আহত কোনো রোগী সেখানে চিকিৎসার জন্য যায়নি।