এনসিএলের প্রথম স্তরের ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে প্রথম দিন শেষে ঢাকার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৯৭ রান।
দেশের হয়ে এ পর্যন্ত দুটি টেস্ট খেলা সাইফ ফিট থাকলে অবশ্য থাকেন দলের সঙ্গেই। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হওয়া সিরিজেও ছিলেন তিনি। তবে, দলে থেকেও তেমন সুযোগ পান না খেলার। এই যেমন, ওই সিরিজের প্রথম টেস্টে ওপেনার সাদমান ইসলাম চোট পেয়ে ছিটকে গেলেও পরেরটিতে খেলা হয়নি তার। স্কোয়াডের বাইরে থেকে এসে খেলেন সৌম্য সরকার। রংপুরের বিপক্ষে ঝকঝকে সেঞ্চুরিতে একাদশে থাকার দাবি আরেকটু উজ্জ্বল করলেন সাইফ।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে সোমবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ঢাকার শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। স্কোর বোর্ডে কোনো রান ওঠার আগেই ফিরে যান দুই ওপেনার। রনি তালুকদারকে এলবিডব্লিউ করে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দেন মুকিদুল ইসলাম। আব্দুল মজিদকে কট বিহাইন্ড করেন বাবু।
দ্বিতীয় ওভারেই ক্রিজে যাওয়া সাইফ কিপার-ব্যাটসম্যান মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে নিয়ে গড়েন প্রাথমিক প্রতিরোধ। তিন পেসার বাবু-মুকিদুল-আরিফুল ইসলামদের ভালোভাবেই সামাল দেন এই দুই জন।
কঠিন সময় পার করে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন মাহিদুল। জমে উঠেছিল সাইফের সঙ্গে তার জুটি। এমন সময়ে নিজের দোষেই ফিরে যান এই তরুণ। অফ স্পিনার মাহমুদুল হাসানের স্টাম্পের বলে শট না খেলে হন এলবিডব্লিউ। ৬ চারে তিনি করেন ৪৭। ভাঙে ৭৯ রানের জুটি।
তাইবু্র পারভেজ ও শুভাগত হোম খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি সাইফকে। দুই অঙ্কে গিয়েই ফিরে যান অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান।
পেসাররা আক্রমণ থেকে সরার পর লম্বা একটা সময় কেবল স্পিনারদের ওপরই নির্ভর করেন রংপুর অধিনায়ক। এই সময়ে বেশ সহজেই খেলেন সাইফ, নাদিফ। রানও আসে। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের ওপর চড়াও হয়ে রানের গতিতে দম দেন নাদিফ।
এক-দুই নিয়ে প্রান্ত বদল করে খেলার সঙ্গে বাজে বল পেলেই বাউন্ডারি হাঁকান থাকেন সাইফ। তিনটি করে ছক্কা-চারে ৯১ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। বাবুর বলে ফাইন লেগে পাঠিয়ে দুই রান নিয়ে ১৬৭ বলে পৌঁছান তিন অঙ্কে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের এটি পঞ্চম সেঞ্চুরি।
সাইফের একশ রানের ৬২ আসে বাউন্ডারি থেকে। নাদিফের সঙ্গে তার জুটির ফিফটি হয় ৭৭ বলে, সেঞ্চুরি ১৭১ বলে।
সেঞ্চুরি ছুঁয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সাইফ। নাদিফও খেলছিলেন আস্থার সঙ্গে। ৮১তম ওভারে দুই জনকেই ফিরিয়ে দেন বাবু। ২৩৩ বলে ১১ চার ও ৫ ছক্কায় ১২৭ রান করা সাইফকে ফিরিয়ে ভাঙেন ১৩৭ রানের জুটি। পরে এলবিডব্লিউ করেন ঢাকা অধিনায়ক নাদিফকে। তার ১০৫ বলে খেলা ৬৯ রানের ইনিংস গড়া ২ ছক্কা ও ৮ চারে।
পরে নাজমুল ইসলাম অপুকে শূন্য রানে কট বিহাইন্ড করেন বাবু। ৫ উইকেটে ২৮০ রানের দৃঢ় অবস্থান থেকে ঢাকার স্কোর হয় ৮ উইকেটে ২৮৭। দিনের বাকি অংশটা কাটিয়ে দেন আরাফাত সানি জুনিয়র ও সুমন ইসলাম।
পেস বোলিং অলরাউন্ডার বাবু ৪ উইকেট নেন ২৫ রানে। মাহমুদুল ৬০ রানে নেন ২ উইকেট। প্রথম দিন ৮ বোলার ব্যবহার করেছেন রংপুর অধিনায়ক নাঈম ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৯৭/৮ (মজিদ ০, রনি ০, সাইফ ১২৭, মাহিদুল ৪৭, তাইবুর ১০, শুভাগত ১০, নাদিফ ৬৯, আরাফাত জুনিয়র ৮*, অপু ০, সুমন ৪*; বাবু ১৩-২-২৫-৪, মুকিদুল ১২-৩-৩৬-১, আরিফুল ৪-১-৯-০, সোহরাওয়ার্দী ২৬-২-৮০-১, রিশাদ ১৩-০-৫৯-০, মাহমুদুল ১৮-৩-৬০-২, তানবীর ৩-০-৮-০, নাসির ১-০-২-০)