সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল
হোটেলে দুই নেতার সাক্ষাত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের বিষয়বস্তু
সংবাদকর্মীদের বলেন।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন নেপালের রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন,
‘আপনি বিশ্বের দারুণ এক অনুপ্রেরণাদায়ী নেতা।’ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বলেন,
‘আমি আপনার অনুরাগী।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত এক দশকে যে অগ্রগতি অর্জন করেছে, তার প্রশংসা করে প্রেসিডেন্ট
ভাণ্ডারী বলেন, জাতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ‘রোল মডেল’
হতে পারে।
নেপালের প্রেসিডেন্ট দুই
দেশের মধ্যে ‘অর্থবহ সহযোগিতা’ বাড়ানোর ওপর জোর দেন এবং বিমসটেকের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর
মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর কথা বলেন।
নেপালের সারের প্রয়োজনের
সময় বাংলাদেশের তাৎক্ষণিক সাড়া দেওয়ায় এবং বাংলাদেশের বন্দর সুবিধা এবং সৈয়দপুর বিমানবন্দর
ব্যবহার করার প্রস্তাব দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান বিদ্যা দেবী
ভাণ্ডারী।
দক্ষিণ এশিয়ার এ দুই দেশই
যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরূপ প্রভাবের সম্মুখীন হয়, সে কথা তুলে ধরে দুর্যোগ মোকাবেলায়
নিজ নিজ সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত করার কথাও বলেন তিনি।
রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সোমবার নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারীকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্মরক মুদ্রা উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিএমও
নেপালের প্রেসিডেন্ট নেপালি
ভাষায় অনূদিত ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ বই দুটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী
ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসায় নেপালের প্রেসিডেন্টকে
ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের
অস্ত্র সরবরাহসহ নেপালের জনগণের সমর্থনের জন্যও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যের
ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে অগ্রধিকার বাণিজ্য চুক্তি
(পিটিএ) স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। পিটিএ চুক্তি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে
বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এছাড়া বিবিআইএন (বাংলাদেশ,
ভুটান, ভারত ও নেপাল) সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ শক্তিশালী করার উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী
বলেন, এতে এ অঞ্চলের বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।
বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের
যৌথ সহযোগিতায় নেপালের পানি সম্পদ ব্যাবহার করে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প করা যেতে পারে বলেও
মত দেন প্রধানমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক,
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল
হোসেন মিয়া এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নেপালের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে
ছিলেন তার মেয়ে উষা কিয়ান ভাণ্ডারী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী প্রদীপ কুমার গোওয়ালি ও নেপাল
একাডেমির চ্যান্সেলর গঙ্গা প্রায়াদ উপ্রেতি।