এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলেছে, বৈশ্বিক মহামারীর প্রভাব এবং সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্টের মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের ‘অস্বাভাবিক ও অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধিতে’ দেশের সিমেন্ট খাতে নেমে এসেছে ‘চরম দুর্দিন’।
“এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের সিমেন্ট খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় সিমেন্ট শিল্পকে রক্ষা করতে আসন্ন বাজেটে এই খাতে বিদ্যমান ৩ শতাংশ অসমন্বয়যোগ্য অগ্রিম আয়কর এবং সরবরাহের ওপর ৩ শতাংশ কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে।”
এছড়া সিমেন্ট উৎপাদনে ব্যবহৃত মৌলিক কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে নির্ধারিত শুল্ক প্রতি মেট্রিক টন ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৫% হারে নির্ধারণ করার আহ্বান জানিয়েছে বিসিএমএ।
সমন্বিত অগ্রিম আয়কর হিসেবে সরকারি কোষাগারে জমা করা প্রায় ১০০০ কোটি টাকা দ্রুত ফেরত বা ছাড় করার বিষয়েও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হস্তক্ষেপ চেয়েছে সংগঠনটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৬ মার্চ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে এক প্রাক বাজেট আলোচনায় বিসিএমএ এর প্রেসিডেন্ট মো. আলমগীর কবির সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবিগুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, যেমন, চীনে মাথা পিছু সিমেন্টের ব্যবহার ১৭০০ কেজি, মালয়েশিয়ায় ৮৯০ কেজি, থাইল্যান্ডে ৬২০ কেজি, ভিয়েতনামে ৫১৮ কেজি, ভারতে ৩২৫ কেজি, শ্রীলঙ্কায় ৪১২ কেজি। অথচ বাংলাদেশে মাত্র ২১০ কেজি।
“প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে এই খাতে, অথচ গুরুত্ব একেবারেই কম। আমাদের দেশের রাজস্ব আহরণ যারা করে থাকেন, তাদের বেশিরভাগই চেষ্টা করেন সোর্স বা উৎস থেকে রাজস্ব আহরণ করতে, যেন মাঠ পর্যায়ে যেতে না হয়। তাই পরিধি না বাড়িয়ে উৎসে কর আদায় করার একটি অলিখিত নিয়ম চলছে।
“রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে এই পরিধি বাড়াতেই হবে, নয়তো সোর্স বা উৎস থেকে রাজস্ব আদায় করা হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টার্গেট ভুল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যেমনটি ঘটেছে এই সিমেন্ট সেক্টরে।”
আলমগীর কবির বলেন, সিমেন্টের সবগুলো কাঁচামালই আমদানি নির্ভর, তাই আমদানি শুল্ক, মূসক ও কর সবই কাটা হয় আমদানি পর্যায়ে।
“আমরা বারবার অনুরোধ করে আসছি- কোন সরকারি প্রতিষ্ঠান কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ন্যূনতম প্রফিট বেঁধে দিতে পারে না। অথচ এই সেক্টরে ৩% অগ্রিম আয়কর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা সমন্বয় বা ফেরতযোগ্য নয়, অর্থাৎ চূড়ান্ত দায়। এটি গণতান্ত্রিক পন্থায় শুধু ভুল বলব না, অন্যায়ও বটে।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে সিমেন্টের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৪ কোটি মেট্রিক টন, যার বিপরীতে প্রায় ৮ দশমিক ৪ কোটি মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। এ শিল্পে বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা।
এ শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে কয়েক লাখ নির্মাণ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা জড়িত। বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি শুল্ক ও কর এ খাত থেকে সরকারি কোষাগারে যায়।