অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টের
দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৮ উইকেটে ২৬৮। শ্রীলঙ্কার চেয়ে
এগিয়ে তারা ৯৯ রানে।
৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে
নেমে কর্নওয়াল অপরাজিত ৬০ রান করে। ৭৯ বলের ইনিংসে ৯ চারের সঙ্গে ছক্কা আছে ২টি।
মূলত অফ স্পিনার হলেও
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কর্নওয়ালের সেঞ্চুরি আছে ১টি, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৪টি। টি-টোয়েন্টিতে
ফিফটি ৪টি, স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৫০। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট হাতে একদমই
ছিলেন বিবর্ণ। এই ম্যাচের আগে ৫ টেস্টে তার রান ছিল মোট ৩৯, গড় ৫.৫৭! অবশেষে দেখাতে
পারলেন তার ব্যাটিং সামর্থ্যের ঝলক।
অষ্টম উইকেটে জশুয়া
দা সিলভার সঙ্গে কর্নওয়ালের ৯০ রানের জুটিতে লিড বাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এই জুটির আগে দিনের
নায়ক ছিলেন লাকমল। উইকেট এ দিন ছিল মন্থর, তবে সুইং মিলেছে ঠিকই। লাকমল তা কাজে লাগান
দারুণভাবে।
বিনা উইকেটে ১৩ রান
নিয়ে সোমবার দিন শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগের দিনের ৩ রানেই ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ
ব্র্যাথওয়েটকে ফেরান লাকমল।
জন ক্যাম্পবেল ও এনক্রুমা
বনার দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৫৬ রানের জুটি। গত মাসে বাংলাদেশ সফরে দারুণ নজর কাড়া বনার
আবারও খেলছিলেন আস্থায়। কিন্তু লাঞ্চের ঠিক আগে বাঁহাতি স্পিনার লাসিথ এম্বুলদেনিয়ার
জোরের ওপর করা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান তিনি ৩১ রান করে।

টেস্টে চতুর্থবার ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন সুরাঙ্গা লাকমল। ছবি : শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট।
নিজের সহজাত আক্রমণাত্মক
ব্যাটিংয়ের প্রবৃত্তি দমিয়ে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন জন ক্যাম্পবেল। তার সাড়ে তিন
ঘণ্টার প্রতিরোধ ভাঙেন পেসার দুশমন্থ চামিরা। ১৪৮ বলে ৪২ রান করে ক্যাম্পবেল ক্যাচ
দেন উইকেটের পেছনে।
এরপর নতুন স্পেলের প্রথম
ওভারে লাকমল বোল্ড করে দেন জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে (২)।
বাংলাদেশ সফরে অসাধারণ
ডাবল সেঞ্চুরির নায়ক কাইল মেয়ার্স এখানে শুরুটা অস্বস্তিতে করলেও পরে জমে যান। বাজে
বলের সাজা দিয়ে বাড়াতে থাকেন রান। কিন্তু ৫ চার ও ২ ছক্কায় তার ৪৫ রানের ইনিংসও থামান
লাকমল।
চা-বিরতির পর জেসন হোল্ডার
(১৯) ও আলজারি জোসেফকে (০) দ্রুত ফিরিয়ে লাকমল পূর্ণ করেন তার ৫ উইকেট। ৬৩ টেস্টের
ক্যারিয়ারে এই স্বাদ পেলেন তিনি মাত্র চতুর্থবার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের তখন
২০০ হওয়া নিয়েই টানাটানি। কিন্তু কর্নওয়াল পাল্টে দিলেন চিত্র। সঙ্গে পেলেন জশুয়া দা
সিলভাবে, ছোট্ট ক্যারিয়ারে এর মধ্যেই যিনি হয়ে উঠেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ‘ক্রাইসিস ম্যান।’
বারবার দলকে উদ্ধার করেন বিপদ থেকে।
দুজনের দারুণ জুটি ওয়েস্ট
ইন্ডিজের লিড বাড়ায় ক্রমে। শুরুতে একটু সময় নিলেও পরে দারুণ সব শটে নিজের জাত চেনান
কর্নওয়াল। ৮ চার ও ২ ছক্কায় ফিফটি স্পর্শ করেন ৬৪ বলে।
শেষ বিকেলে ভাঙে দুজনের
জুটি। চামিরার বলে ৪৬ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জশুয়া। তবে কর্নওয়ালকে ফেরাতে পারেনি
শ্রীলঙ্কা। ক্যারিবিয়ানদের লিড আরও বাড়ার আশা তাই আছেই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস : ১৬৯
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস : ১০১ ওভারে ২৬৮/৮ (ব্র্যাথওয়েট ৩, ক্যাম্পবেল
৪২, বনার ৩১, মেয়ার্স ৪৫, ব্ল্যাকউড ২, হোল্ডার ১৯, জশুয়া ৪৬, জোসেফ ০, কর্নওয়াল ৬০*,
রোচ ৪*; লাকমল ২৪-৯-৪৫-৫, বিশ্ব ১৬-৫-৫২-০, চামিরা ২২-১-৭১-২, এম্বুলদেনিয়া ২৮-৬-৬৪-১,
ধনাঞ্জয়া ১১-২-৩০-০)।